আইনের যথাযথ প্রয়োগ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার সমন্বয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব : আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার সমন্বয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সবাই যদি সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিজ-নিজ দায়িত্ব পালন করে তাহলে গণপরিবহনে অবশ্যই সুশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি হবে উল্লখ করে তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা বজায় থাকলে সড়কগুলোও হয়ে উঠবে অধিকতর নিরাপদ।
আনিসুল হক আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাগো বাংলা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক : আইনের প্রয়োগ ও জনসচেতনতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন,‘নিরাপদ সড়কের জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগবে, মাইন্ডসেটের পরিবর্তন আনতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে। জনগণকে বুঝাতে হবে যে, শুধু চালকের ভুলে দুর্ঘটনা হয় না অন্যান্য কারণেও হয়।
তিনি বলেন,‘এটা দুর্ভাগ্যই যে, সরকারের এত উন্নয়ন সত্ত্বেও আমাদের সড়ক-মহাসড়কগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ করা সম্ভব হয়নি। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহাণি হয়েছে এবং হচ্ছে। সম্ভাবনাময় তরুণ প্রাণ,আমাদের সন্তানদের জীবন প্রদীপ অকালে নিভে যাচ্ছে যন্ত্রদানবের চাকায় পিষ্ট হয়ে। ’
মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ সড়ক-আমাদের সবারই প্রত্যাশা। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবির প্রতি বর্তমান সরকারও শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেন,‘প্রতিটি সড়ক নিরাপদ করার বাস্তবতা বিবেচনায় রেখেই আমাদের সরকার এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে,৩৫ বছর আগের একটি পুরনো আইন দিয়ে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই গত বছর (২০১৮) আমাদের সরকার ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস করেছে। পরিবহন খাতে শৃংখলা প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ অধিদপ্তরসমূহ।
চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, বৈধ লাইসেন্স নিশ্চিতকরণের মতো জরুরী কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরসমূহ কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আনিসুল হক বলেন,‘যে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সালে আমরা প্রণয়ন করেছি তা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই করেছি। তবে এ আইনের সুফল পেতে হলে তা যথাযথভাবে কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরী বলে বিবেচনা করি। এই আইন যদি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা যায় তাহলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। একইসাথে যানবাহনে গতিনিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানো গেলে বেপরোয়া গাড়ির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে পরিবহন মালিকদেরও আন্তরিক এবং সদিচ্ছা থাকা চাই। দায়িত্ব পালনেও সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।’
তিনি বলেন,‘আমরা যদি এ সত্য মনে রাখি যে, আধুনিক গণতান্ত্রিক দুনিয়ায় মানুষের অধিকার এবং মর্যাদা সমান। তাহলে আইনের প্রয়োগও সবার জন্য সমান হতে হবে।’
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কবি নাসির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিসিটি অব বাংলাদেশ’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুঁইয়া ও সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত বক্তৃতা করেন।