ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


স্কুল ছাত্রী রুপার আত্নহত্যা প্ররোচনায় সেই উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা


৯ নভেম্বর ২০২২ ২৩:১৪

সংগৃহিত

রাজধানীর দক্ষিণখানের রুপা আত্নহত্যার প্রচারোনায় দায়ে পাবনার বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবুসহ ৪ জেনর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন রুপার মা । আদালত মামলাটি গ্রহন করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আলোচিত এ মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন, মোতাহার, জুনাত সরদার, বোক্কা।

বাদীর আইনজীবী নূর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করতে থাকা অবস্থায় মেয়ে রুপার ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাবনার বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবুর। একপর্যায়ে ঘটনাটি ফাঁস হলে আত্মহননের পথ বেছে নেয় সে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দক্ষিণখানে আলোচিত ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা করতে চাইলেও করতে পারেনি ভুক্তভোগী নারী। গত প্রায় দেড় মাসের অধিক সময় ধরে ওই নারী যেন মামলা করতে না পারে সে জন্য হুমকির পাশাপাশি এক প্রকার অবরুদ্ধ করে রাখা হয় তাকে। অবশেষে আজ বুধবার (৯ নভেম্বর) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী।

জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী গত প্রায় ১০ বছর আগে পাবনার নগরবাড়ি এলাকা থেকে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দুই কন্যা সন্তান নুপুর আর রুপাকে নিয়ে ঢাকার দক্ষিণখান এলাকায় বসবাস শুরু করেন। কখনো গার্মেন্টস আবার কখনো অন্যের বাড়িতে কাজ করে কিছু টাকাও জমান। আর সেই টাকা কিছু লাভ হওয়ার আশায় ওই এলাকার রুস্তম আর সোহানের হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে তারা দু’জনেই লাভ তো দূরের কথা আসল টাকা দিতে নানাভাবে ঘুরাতে থাকেন। উপায়হীন হয়ে ওই নারী নানা লোকের পরামর্শে টাকা উঠানোর জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবুর শরাণাপন্ন হন। বাবুর নিকট যাওয়ার পর বাবুর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার ওপর। এরপর নানা কৌশলে তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। একপর্যায়ে ওই নারীকে ফ্ল্যাট বাসা ভাড়াও করে দেন। বাসা নেয়ার পর বাবু ওই বাসায় নিয়মিত আসা যাওয়া শুরু করেন। ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়া চলা অবস্থায় তার মেয়ে রুপার ওপর নজর পড়ে। কিশোরী রুপাকে স্মার্ট ফোন কিনে দেয়া থেকে শুরু করে বাইরে বাজার করতেও নিয়ে যেত। যেহেতু মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক সেহেতু মাও চিন্তা করেনি তারই প্রেমিকের নজর পড়বে তারই মেয়ের ওপর। এভাবে চলতে থাকা অবস্থায় মা তার মেয়ের মোবাইলে খেয়াল করলে মেয়ের সঙ্গে প্রেমের বিষয়টি ধরা পড়ে। এমনকি তার মেয়ে ও বাবুর আপত্তিকর নানা ছবিও দেখে ফেলে।


এদিকে বিষয়টি দেখে ফেলার পর থেকে মেয়েকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। পাশাপাশি বাবুর সঙ্গেও ওই নারী বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এ সময় বাবু ওই নারীকে হুমকি দেন। সংসারে এ নিয়ে অশান্তি শুরু হলে একপর্যায়ে মেয়ে রুপাও বুঝতে পারে বাবু তার মায়ের সঙ্গে একই কাজ করেছে। ঘটনার দিন ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে ওই নারী মেয়েকে একা রেখে অপর মেয়ে নুপুরের বাড়ি যায়। সেখান থেকে দুপুরের পর বাসায় আসার পর দেখে মেয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে দক্ষিণখানা থানা পুলিশের একটি দল লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।

এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, পুলিশ বাসায় আসার পর তার নিকট থেকে পুরো ঘটনা শোনে। এরপর রুপার মোবাইল নিয়ে চলে যায়।


তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চেয়ারম্যান যা করেছে তা কখনো মেনে নেয়ার মতো না। আমি তার নিকট সাহায্য চাইতে গিয়েছিলাম। সে আমার সঙ্গে নানা কৌশল করে আমাকে দুর্বল করে দেয়। আমি টিনের বাসায় ছিলাম সে টাকা দেয়াতে ফ্ল্যাট বাসায় উঠি। কিন্তু আমার সঙ্গে এগুলো করার পর আমার মেয়েকে নিয়ে এমন খেলা খেললো। শেষ পর্যন্ত আমার মেয়েকে বাঁচতেও দেয়নি।