সাংসদের বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাদের মামলা, আদালতে খারিজ

বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাসানুর রহমান ও তার বাবা খলিলুর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। রোববার (৭ অক্টোবর) পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একই উপজেলার রায়হানপুরের বাসিন্দা ইউনুস খান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
রোববার দুপুরে আইনজীবী জামাল হোসেন মামলাটি আদালতের কাছে পেশ করেন। এসময় আসামী পক্ষে আইনজীবীরা ঘোর বিরোধীতা করেন এবং আদালতে হট্টগোলে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরে বিচারক আব্বাস উদ্দীন মামলাটি খারিজ করে দেন।
মামলার বাদী বর্ণনায় উল্লেখ করেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একজন ত্যাগী সদস্য। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় খলিলুর রহমান ও তার বড় ভাই শাহ্জাহান মিয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগীতায় রাজাকার, আল বদর, আল সামস বাহিনী গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সক্রিয় অবস্থান নেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নাগরিক মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সমর্থনকারীদের নির্যাতন, হত্যা, নারী ধর্ষণ, সম্পদ লুট ও বাড়ী ঘর অগ্নি সংযোগ করে বিভিষীকাময় কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় বাদীর প্রতিবেশির মাদারতলী গ্রামের আবদুল মোতালেব কেরানীকে নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করে লাশ ক্ষত বিক্ষত করে। আসামীরা বাদীর বাড়ীতে হামলা করে টাকা, স্বর্ণলাংকার ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যাওয়ার পরে ৪টি ঘর পুড়িয়ে দেয়। একই সময় গ্রামের আরো কয়েকটি বাড়ী লুটপাট করে পুড়িয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ২ নম্বর আসামী খলিলুর রহমান মহাকুমা ব্যাপি সাধারণ মানুষের টাকা, স্বর্ণলংকার ও সম্পদ লুটপাট করে স্থাবর অবস্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়েন। ৩ নম্বর আসামী এই অবৈধ সম্পদের সুবিধা ভোগ করতেছে।
মামলার আর্জিতে বাদি তিন নং আসামী বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তার পিতার অবৈধ অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তর দাবি জানান। তবে বাদীর আর্জি শোনার পরে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট মো. আব্বাস উদ্দিন মামলাটি খারিজ করে দেন।
মামলার বাদী ইউনুস খান জানান, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় আসামীরা তাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। বিশেষ করে ১নং আসামী পরবর্তিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত এবং তার মৃত্যুর পর ছেলে রিমন একই ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আমিসহ আমার পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। বর্তমানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর লোকজন দিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে। আমি মামলাটি পুনঃ বিবেচনার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করবো।
মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন বলেন, যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। আমরা মামলাটি রিভিউর জন্য আদালতে আবেদন করে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে বিচাররক মহোদয়কে অনুরোধ করবো।
এমএ