ঢাকা শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


ছাত্রকে পেটানোর ঘটনায় সেই শিক্ষক কারাগারে


১১ মার্চ ২০২১ ২১:০৩

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদ্রাসাছাত্রকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মুহাম্মদ ইয়াহিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিহান সানজিদা শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মাদ্রাসাশিক্ষককে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

এরআগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।

মুহাম্মদ ইয়াসিন ফরহাদ (৮) নামের মাদ্রাসাছাত্রকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার একটি ভিডিও মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। হাটহাজারী পৌর এলাকার কনক কমিউনিটি সেন্টারের কাছে মারকাজুল কুরআন ইসলামিক একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ইয়াহিয়াকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করে। আটক করে তাকে নেওয়া হয় থানায়। মঙ্গলবার রাতে পিটুনির শিকার মাদ্রাসাছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে আইনি প্রতিকার না চেয়ে উল্টো লিখিতভাবে শিক্ষককে ছেড়ে দিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়।

এরপরই হেফাজতে রাখা শিক্ষককে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে বুধবার আবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়, মারকাজুল কুরআন ইসলামিক একাডেমিতে ওই ছাত্র হেফজ বিভাগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভর্তি হয়। মঙ্গলবার বিকেলে ওই ছাত্রের মা ছেলেকে দেখতে মাদ্রাসায় যান। বিকেল ৫টার দিকে চলে যাওয়ার সময় ছেলে মায়ের সাথে যেতে কান্নাকাটি করে।

একপর্যায়ে ছেলে কান্না করতে করতে মায়ের পিছু নিয়ে মাদ্রাসা থেকে ২০০ মিটার দূরে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কের কনক কমিউনিটি সেন্টারের সামনে যায়। এসময় হুজুর হাফেজ মুহাম্মদ ইয়াহিয়াও পিছু গিয়ে ছাত্র ফরহাদকে ধরে নিয়ে মাদ্রাসায় নিয়ে আসতে থাকে। ছাত্র আসতে না চাইলে তাকে টেনেহিঁচড়ে মাদ্রাসায় নিয়ে এসে বেত দিয়ে নির্মমভাবে পিটাতে থাকে।

পেটানোর দৃশ্য সেখানকার এক স্কুলছাত্র মোবাইলে ধারণ করে। পরে ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়। বিষয়টি দেখে রাত দেড়টার দিকে হাটহাজারী ইউএনও রুহুল আমিন পুলিশ টিমসহ মাদ্রাসায় গিয়ে মাদ্রাসার হুজুরকে আটক করেন। এ সময় খবর দেওয়া হয় ছাত্র ফরহাদের পরিবারকে। পরে হুজুরকে ইউএনও'র কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীর মা পারভীন আক্তার বলেন, ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসায় দিয়েছি। সে আমার পিছু পিছু কান্না করতে করতে আসে। পরে হুজুর ধরে নিয়ে কী করেছে জানি না। রাতে ভিডিওতে যা দেখলাম তাতে হতবাক হয়েছি।