ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


‘ধর্ষক’-এর দাদার সঙ্গে শিশুর বিয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের


২৫ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৩৫

প্রতিকি

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে গ্রাম্য সালিসে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবকের ৮৫ বছর বয়সী দাদার সঙ্গে ভুক্তভোগী ১১ বছরের শিশুর বিয়ে দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে জামালপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। ওই বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউপির বয়ড়াপাড়া গ্রামের একটি মহিলা মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ওই শিশুর সঙ্গে একই এলাকার ৮৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বখাটে নাতির শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে ওই শিশু অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে কবিরাজি চিকিৎসায় মেয়েটির গর্ভপাত ঘটানো হয়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ১৬ নভেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয় মাতবররা এ বিষয়ে সালিস বৈঠক করেন। সালিসে অভিযুক্ত ১৮ বছর বয়সী ওই যুবককে ১০টি দোররা মেরে তাঁর কর্মকাণ্ডের দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদার ওপর।

পরে ওই বৃদ্ধের সঙ্গে ১১ বছর বয়সী ওই শিশু মেয়েটির বিয়ে দেন স্থানীয় মাতবররা। ওই বৃদ্ধ ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না, চোখেও ঝাপসা দেখেন। তিনি সাত সন্তানের জনক। তাঁর দুই স্ত্রী অনেক আগে মারা গেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাঁর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয় চর আমখাওয়া ইউপি সদস্য নাদু মেম্বারসহ আরো কয়েকজন।

চর আমখাওয়া ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন নাদুও বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মুরব্বিদের নিয়ে সালিস করা হয়। সালিসে অনৈতিক কাজ করায় ওই যুবককে ১০টি দোররা মারা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্ষকের দাদার সঙ্গে শিশুটির বিয়ে দেওয়া হয়।

চর আমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আকন্দও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।