অবশেষে মুক্তি পেলেন ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন কিশোর ইব্রাহিম
নয় মাসেরও বেশি সময় আটক থাকার পর ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন কিশোর মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি নিপীড়নের প্রতিচ্ছবি হিসেবে এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হয়। দীর্ঘ চাপ প্রয়োগের পর যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো তার মুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, ফ্লোরিডার ১৫ বছর বয়সী কিশোর মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে রামাল্লাহ সংলগ্ন আল-মাজরা আশ-শারকিয়া শহরের পারিবারিক বাড়ি থেকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে।
ইব্রাহিমের পরিবার জানায়, গ্রেফতার অভিযানের সময় তাকে চোখ বেঁধে মারধর করা হয় এবং কারাগারে থাকার সময় সে মারাত্মকভাবে ওজন হারায়।
ইসরায়েল তার বিরুদ্ধে দেশটির বসতি স্থাপনকারীদের লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের অভিযোগ তোলে; যা মুহাম্মদ অস্বীকার করে। পুরো বন্দিত্বকালেই সে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারেনি, এমনকি সাক্ষাৎ অধিকারও ছিল না। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মাঝে মাঝে তার অবস্থা সম্পর্কে পরিবারকে জানাতেন।
মুহাম্মদের মুক্তির দাবিতে মাসের পর মাস ধরে মার্কিন মানবাধিকার সংগঠন ও কংগ্রেস সদস্যরা চাপ দিয়ে আসছিলেন। গত কয়েক সপ্তাহে তার শারীরিক অবস্থা অবনতির খবর প্রকাশ পেলে এই চাপ আরও তীব্রতর হয়।
গত মাসে, ২৭ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা একটি যৌথ চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে তার মুক্তির জন্য হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান। ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেনসহ আরও কয়েকজন আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে এই দাবি তোলেন।
মুহাম্মদের মুক্তির পর তার পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করেছে। তার চাচা জেয়াদ কাদুর বলেন, 'শব্দে বোঝানো যাবে না— আমাদের পরিবারের জন্য এটি বেশ আনন্দের দিন। আমরা তাকে মুক্ত অবস্থায় না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না।'
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ— ইসরায়েলি সৈন্যদের মুহাম্মদকে প্রথমেই গ্রেফতার করার কোনো নৈতিক অধিকারই ছিল না, আর গত নয় মাস ধরে তারা যেন এক অন্তহীন দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন।
