ঢাকা বুধবার, ৭ই মে ২০২৫, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২


ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু: পাল্টাপাল্টি হামলা- পাকিস্তানে নিহত সাত


৭ মে ২০২৫ ০৮:১৭

সংগৃহীত

সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের অন্তত নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে ভারত। তবে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতীয় বাহিনী পাঁচটি স্থানে হামলা চালিয়েছে।

 

পাকিস্তানের আন্ত: বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন, হামলায় অন্তত ৭জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৩৫ জন। এছাড়া দুইজন নিখোঁজ রয়েছে।

 

অপরদিকে, ভারতের দুইটি বিমান এবং একটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান।

 

এদিকে, ভারতের সেনাবাহিনী তাদের এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া এক পোস্টে দাবি করেছে, ভারত শাসিত কাশ্মীরের পুঞ্চ-রাজৌরি এলাকার ভিম্বার গলিতে কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তান।

 

ভারত এ হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিন্দুর’। ভারতের দাবী এই হামলায় ‘সন্ত্রাসী স্থাপনা’কে নিশানা করা হয়েছে। যেসব স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেখান থেকে ভারতের ওপরে ‘সন্ত্রাসী’ হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে, পাকিস্তানের কোনও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয় নি বলে দাবি করেছে ভারত।

 

গত ২২শে এপ্রিল ভারত শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ হামলা হলো।

 

সবশেষ খবরে জানা যাচ্ছে, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকা থেকে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।

 

সাত জন নিহত, দাবি পাকিস্তানের:

 

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র আহমেদ শরিফ জানিয়েছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশুসহ সাত জন নিহত হয়েছেন। একটি মসজিদ সহ একাধিক জায়গায় এ হামলা চালানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

তিনি আরও দাবি করেছেন যে, দুটি ভারতীয় বিমান এবং একটি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছেন।

 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ আগে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, শত্রুরা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে পাঁচটি জায়গায় এক কাপুরুষোচিত আক্রমণ চালিয়েছে। এই আগ্রাসনের ঘটনা ছেড়ে দেওয়া হবে না।

 

বিনা প্ররোচনায় ভারতের এই হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। তাদের বিমান বাহিনীর জেট বিমানগুলি ইতিমধ্যেই আকাশে রয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা :

 

ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, হামলার পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গে কথা বলেছেন।

 

পরে হোয়াইট হাউজে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই অভিযানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দেন, “এটা লজ্জর ঘটনা”।

 

হোয়াইট হাউজে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমি শুধু চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সংঘাত শেষ হোক।”

 

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতের সামরিক অভিযানে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

 

তিনি বলেছেন, “মহাসচিব দুই দেশকেই সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত-পাকিস্তানের আরও একটি সামরিক সংঘাতের ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না।”

 

খবর : বিবিসি ও রয়টার্স।