ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ইদলিবে অভিযানে উদ্বিগ্ন বিশ


৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৩০

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে অভিযানের জন্য রাশিয়া এবং ইরানকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি হয়েছে সিরীয় বাহিনী। রুশ যুদ্ধবিমানের হামলায় তছনছ হয়ে গেছে ইদলিবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। লড়াই বাঁধলে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এই শহরে মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে বলে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পক্ষ।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই ইদলিবে সামরিক অভিযান না চালানোর জন্য সিরিয়া এবং তার মিত্র ইরান ও রাশিয়াকে হুঁশিয়ার করেন। তবে গত তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইদলিবে মঙ্গলবার হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

গত সাত বছরে যে জিহাদি সংগঠন ও বিদ্রোহী দলগুলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছে, তাদের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি এই ইদলিব। জাতিসংঘের বক্তব্য অনুযায়ী, ইদলিবের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৯ লাখ।এদের মধ্যে ১০ লাখই শিশু।

সিরিয়ার শেষ বিদ্রোহী অধ্যূষিত অঞ্চল ইদলিবে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও তাদের মিত্র রাশিয়া। এর মাধ্যমে সাত বছর ধরে চলতে থাকা সিরিয়া যুদ্ধ হয়তো চূড়ান্ত পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। সে কারণেই রাশিয়া এবং সিরীয় বাহিনী সেখানে অভিযান চালানোর বিষয়ে এত তৎপর।

ইদলিবের বেসামরিক নাগরিকদের অর্ধেকের বেশিই এসেছে এক সময় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে। যুদ্ধের সহিংসতা থেকে বাঁচতে সেসব জায়গা থেকে তারা হয় স্বেচ্ছায় পালিয়ে এসেছে অথবা তাদের বাধ্য করা হয়েছে এলাকা ছাড়তে।

প্রাদেশিক রাজধানী ও সীমান্ত দিয়ে তুরস্কে প্রবেশের পথ বাব আল-হাওয়াসহ ইদলিবের প্রধান প্রধান এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এইচটিএস। এইচটিএস-এর আনুমানিক ১০ হাজার সৈন্য রয়েছে যাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশী নাগরিক। জাতিসংঘ এটিকে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

সিরীয় সরকার এখন ইদলিব অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন?

সিরিয়া যুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ বর্তমানে প্রেসিডেন্ট আসাদের পক্ষে মোড় নিয়েছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া পরিচালিত বিমান হামলা এবং সিরিয়ার আরেক মিত্র দেশ ইরানের হাজার হাজার সৈন্যের সমর্থনে অন্যান্য অঞ্চলের বিদ্রোহীদের দমন করতে সক্ষম হয়েছে সিরীয় বাহিনী। ৩০ অাগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লেম ঘোষণা করেন যে সরকারের প্রধান লক্ষ্য এখন ইদলিব স্বাধীন করা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, সিরীয় সরকার বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে সন্ধি চুক্তির মাধ্যমে ওই অঞ্চলের আধিপত্য দখল করতে চায়। কিন্তু পাশাপাশি ত্যাগের পরোয়া না করে এইচটিএসকে পরাজিত করার দৃঢ় সঙ্কল্পও ব্যক্ত করেন তিনি।

রাশিয়ার মতে, সিরীয় সরকারের পূর্ণ অধিকার রয়েছে নিজেদের এলাকায় জঙ্গীবাদের আশঙ্কা দমন করার। ইদলিবে সংঘর্ষ কামনোর উদ্দেশ্যে করা পূর্ববর্তী এক চুক্তির শর্ত কতটা পালিত হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করার উদ্দেশ্যে ইদলিবে তুরস্কের সৈন্যও রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ইদলিবে যেন বিদ্রোহী নিধনে সর্বাত্মক অভিযান না চালানো হয় সে বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

এরই মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশী সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া তুরস্ক আশঙ্কা করছে ইদলিবে যুদ্ধ ছড়িয়ে পরলে নতুন করে তাদের সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল নামবে।

আরআইএস