ঢাকা মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ইন্দোনেশিয়ার বাতাসে লাশের গন্ধ


১ অক্টোবর ২০১৮ ২১:৫৫

ইন্দোনেশিয়ার পালু শহরে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামিতে মৃত মানুষের লাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানো শুরু করেছে। পঁচা লাশ থেকে রোগ–জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কায় গণকবর খোঁড়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।

একদিকে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে আত্মীয়স্বজনের কাছে হস্তান্তরের জন্য রাখা হয়েছে লাশগুলো।

ধ্বংসস্তূপে অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। চালাতে ভারী যন্ত্রপাতি না থাকায় ধসে পড়া হোটেল ও শপিং মলগুলোয় উদ্ধার তৎপরতা ব্যহত হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের।

গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ৭.৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পর সুনামির ফলে সৃষ্ট প্রায় ২০ ফুট উঁচু ঢেউ পালু শহরকে ভাসিয়ে দেয় এতে মৃতুর সংখ্যা ৮৩২-এ পৌঁছেছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভূমিধসে শহরের প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। লোকজন খোলা স্থানে অবস্থান করছে। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসায়ও ব্যহত হচ্ছে।

ডা. সাসোনো বলেন, লাশ থেকে রোগ–জীবাণু ছড়ানো ঠেকাতে গণকবরে লাশগুলোকে দাফন করা হবে। তিনি বলেন, লাশ থেকে গন্ধ ছড়ানো শুরু করেছে। লাশগুলো স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু এখন আর অপেক্ষা করতে পারছি না।

গতকাল রোববার রাতে একটি গণকবর খোঁড়া হয়েছে। ওই কবরে কমপক্ষে ৩০০ মরদেহ সমাহিত করা হবে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো দুর্যোগ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি দিন-রাতজুড়ে উদ্ধারকাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ধ্বংসস্তূপে জীবিত লোকজন থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।ধসে পড়া শপিং মল থেকে মোবাইল ফোনের সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে। সেখানের রোয়া রোয়া হোটেলের ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষের চিৎকার শোনা গেছে।

থালিব বাওয়ানো নামের একটি উদ্ধারকর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কয়েকটি জায়গায় শিশুসহ কয়েকজনের আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে পড়া এই মানুষগুলোকে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে আমরা সাহস দিয়ে যাচ্ছি। আমরা তাদের খাবার ও পানি দিয়েছি। কিন্তু তারা সেগুলো চাইছে না, তারা বেরিয়ে আসতে চাইছে। তারা ভয়ে চিৎকার করেই চলেছে।

গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার লমবক দ্বীপে সিরিজ ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে ৫ আগস্টের ভূমিকম্পে দেশটিতে ৪৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশটিতে ২০০৪ সালে ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে। এতে লাখো মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

এসএমএন