ঢাকা বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


মার্কিন আদালতে মানবপাচারের দোষ স্বীকার বাংলাদেশি মিলনের


৮ মার্চ ২০২০ ১৫:৩৯

অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মানবপাচারের অভিযোগ স্বীকার করেছেন বাংলাদেশি নাগরিক মোহাম্মদ মিলন হোসেন (৩৯)। তার এ স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট জজ ডায়না সালদানা। এ জন্য মিলন হোসেনকে কি শাস্তি দেয়া হবে তা ঘোষণা করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে কবে শাস্তি ঘোষণা করা হবে তাও জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, মেক্সিকোর টাপাচুলায় বসতি মিলন হোসেনের। তিনি বাংলাদেশিদেরকে প্রথমে মেক্সিকো নিয়ে যেতেন। সেখান থেকে পাচার করছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মিলন স্বীকার করেছেন, ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত তিনি এই কাজে লিপ্ত ছিলেন। এ সময়ে তিনি অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে পাচার করে পাঠাতেন যুক্তরাষ্ট্রে। এ জন্য মেক্সিকোর টাপাচুলায় নিজে একটি হোটেল চালাতেন। অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে সেখানে আশ্রয় দিতেন। তারপর সময় সুযোগমতো তাদেরকে পাচার করে দিতেন যুক্তরাষ্ট্রে। এ জন্য তিনি মেক্সিকোর টাপাচুলা থেকে মন্টেরি পর্যন্ত এসব অভিবাসীকে বিমানের টিকিট দিতেন এবং দিতেন অন্য সব সহযোগিতা। মন্টেরিতে তার বাকি কাজে সহযোগিতা করতেন মোকতার হোসেন নামে একজন। তিনি সেখান থেকে এসব অভিবাসীকে সীমান্ত পার করে দিতেন।
এ নিয়ে বিচারে আইন মন্ত্রণালয়ের ক্রিমিনাল ডিভিশনের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান এ বেনজোস্কি বলেছেন, বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচারে মিলন হোসেন ও মোকতার হোসেনের ভয়াবহ এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। আমাদের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করার পক্ষে যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, মনির হোসেনের দোষ স্বীকার করে নেয়া সেই প্রতিশ্রুতিকে খর্ব করে দিয়েছে। তাদের দায়িত্ব ছিল যুক্তরাষ্ট্রে এবং বিদেশে অবৈধ অভিবাসী পাচার বিঘ্নিত করা। দায়িত্ব ছিল মানবপাচারকারীদের বিচারের আওতায় আনা। টেক্সাসের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের অ্যাটর্নি রায়ান কে প্যাট্রিক বলেছেন, সীমান্তের নিরাপত্তা হলো জাতীয় নিরাপত্তা। আমাদের আইনপ্রয়োগকারী অংশীদাররা সীমান্তের উভয় পাশে কাজ করছেন সীমান্তকে নিরাপদ রাখার জন্য। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে রয়েছে টেক্সাসের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট। তাই আমরা জাতিকে নিরাপদ রাখতে আমাদের দায়িত্ব অব্যাহত রাখবো।
মোহাম্মদ মিলন হোসেনের দোষ স্বীকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন সান অ্যান্টনিওর অভিবাসন ও কাস্টমস কর্মকর্তা স্পেশাল এজেন্ট ইনচার্জ শেন ফোল্ডেন বলেছেন, বিবাদী আর্থিক লাভের আশায় সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে এটা স্পষ্ট যে, তাকে পরিণতি ভোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন বহুজাতিক অপরাধ বিষয়ক সংগঠনগুলোর সদস্যদের বিষয়ে জোরালো তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা নেবে। কারণ, তারা যেসব মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন তাতে এখানকার মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে। তাই আমরা সীমান্ত অখণ্ড রাখতে এবং আমাদের সম্প্রদায়কে নিরাপদ রাখতে দেশের ভেতরের এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আইনপ্রয়োগকারী অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবো।