হেভি মেটাল কিংবদন্তি ওজি ওসবার্ন আর নেই

‘দ্য গডফাদার অব হেভি মেটাল’ খ্যাত ওজি ওসবার্ন আর নেই। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে তার মৃত্যু হয়।
ওজির পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে, আমাদের প্রিয় ওজি অসবোর্ন আজ সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই ছিলেন, ভালোবাসায় ঘেরা। এই কঠিন সময়ে আমাদের গোপনীয়তা রক্ষার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ তার মৃত্যুর কারণ এখনো জানানো হয়নি।
এই খবর আসে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর, যখন ওজি তার জন্মস্থান বার্মিংহামে ‘ব্ল্যাক সাবাথ’-এর সাথে মঞ্চে ফিরেছিলেন ‘ব্যাক টু দ্য বিগিনিং’ কনসার্টে। ব্যান্ডের বেসিস্ট গিজার বাটলার, ড্রামার বিল ওয়ার্ড এবং গিটারিস্ট টনি আইওমি-র সাথে এই রিইউনিয়ন শো’টি ছিল তাদের ২০ বছরের মধ্যে প্রথম পারফরম্যান্স। ওজির শেষ মঞ্চ উপস্থিতি হিসেবে এটি প্রচার করা হয়েছিল।
১৯৪৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নেয়া জন ‘ওজি’ অসবোর্ন স্কুল ছাড়েন ১৫ বছর বয়সে। কসাইখানা থেকে শুরু করে চুরি পর্যন্ত সব কাজ করেছিলেন তিনি!
১৯৬৭ সালে ব্ল্যাক সাবাথ গঠনের মাধ্যমে সঙ্গীতজগতে প্রবেশ করেন তিনি। তাদের প্রথম অ্যালবাম মাত্র ১২ ঘন্টায় রেকর্ড করা হয়েছিল! এরপর একে একে আসে ‘প্যারানয়েড’, ‘মাস্টার অব রিয়েলিটি’র মতো বহু প্ল্যাটিনাম হিট।
১৯৭৮ সালে ব্যান্ড থেকে বের হলে অজি শুরু করেন একক ক্যারিয়ার। ১৯৮০ সালে মুক্তি পায় ‘ব্লিজার্ড অব অজ’ নামের অ্যালবাম। এই অ্যালবামে ছিল বিখ্যাত গান ‘ক্রেজি ট্রেইন’। পরের বছর আসে ‘ডায়েরি অব আ ম্যাডম্যান’। বিক্রি হয় ৫০ লাখ কপির বেশি।
এছাড়াও ‘আয়রন ম্যান’ ও ‘প্যারানয়েড’-এর মতো গানে কণ্ঠ দিয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ওজি ওসবার্ন ।
মঞ্চে বাদুড়ের মাথা কামড়ানো, মাংস ছোড়া, মাদক ও অ্যালকোহলে আসক্তি—ওজি সবসময়ই বিতর্কিত ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ব্ল্যাক সাবাথ থেকে বেরিয়ে গেলেও ১৯৯৭ সালে আবার ফিরে আসেন। একক ক্যারিয়ারে ১১টি অ্যালবাম বের করেন, পেয়েছেন ৩টি গ্র্যামি।
দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যারন অসবোর্ন (যিনি তার ম্যানেজারও ছিলেন) এবং সন্তানদের নিয়ে দ্য অসবোর্নস রিয়েলিটি শো তাকে নতুন প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে। শোটি এমি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিল!
২০১৯ সালে নিউমোনিয়ার পর থেকে তার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। ২০২০ সালে তিনি পারকিনসন্স ডিজিজ-এ আক্রান্ত হন। ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমস-এ শেষবারের মতো মঞ্চে ওঠেন। গত বছর তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের শেষ ইচ্ছা—আরও একটি শো করে ভক্তদের ধন্যবাদ জানানো।’
ওজি অসবোর্ন রেখে গেছেন স্ত্রী শ্যারন, প্রথম সংসারের তিন সন্তান এবং শ্যারনের সাথে তিন সন্তান—জ্যাক, কেলি ও এমি।