ঢাকা শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


জাবিতে র‌্যাগিং বিরোধী র‌্যালি: ১বছরের জন্য বহিষ্কার


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:৪০

‘র‌্যাগিং মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়বো, সকলে মিলে সৌন্দর্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করবো’ স্লোগানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং বিরোধী সচেতনতামূলক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে র‌্যাগ দিলে প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিকভাবে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজনা ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যেগে রোববার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে র‌্যাগিং বিরোধী র‌্যালি উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘র‌্যাগিং একটি অপসংস্কৃতি। শিক্ষার্থীদের মনন বিকাশে বাধা দেয় এমন অপসংস্কৃতি থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় র‌্যাগিং মুক্ত ক্যাম্পাস গড়া সম্ভব।’

সভাপতির ভাষণে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘র‌্যাগিং একটি অপরাধমূলক কর্মকা-। র‌্যাগিং মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করেছে। র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিক এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় হতে বহিষ্কার করা হবে।’

নবীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘একটু সময় লাগলেও ক্যাম্পাস নিজে চিনবে, র‌্যাগিং এর বিরুদ্ধে নিজে প্রতিবাদ করবে, প্রয়োজনে প্রশাসনকে অবহিত করবে।’ আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অমর একুশ’ ভাস্কর্যের সম্মুখ থেকে বেলা ১১টায় র‌্যাগিং বিরোধী র‌্যালি শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুরাতন কলাভবনে গিয়ে শেষ হবে বলে জানান উপাচার্য।

এরআগে সকাল দশটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিং বিরোধী প্ল্যাকার্ড বহন করে শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত হয়। র‌্যাগিং বিরোধী শ্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে শহীদ মিনার থেকে র‌্যালি শুরু হয়ে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালিতে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. নুরুল আলম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ছাত্র-কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক রাশেদা আখতার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তাগণ র‌্যাগিং এর বিরুদ্ধে কঠোর হুসিয়ারি উচ্চারণ করেন এবং র‌্যাগিংকর্তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

র‌্যালিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিশ^বিদ্যালয় শাখা সভাপতি মো. জুয়েল রানার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। অংশ নেয়া ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারাই বিগত বছরগুলোতে হলে র‌্যাগিং বা নিপীড়ন হয়ে থাকে বলে মনে করেন বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘পূর্ববর্তী বছরে হলগুলোতে যে র‌্যাগিং হয়েছে তা ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের ছত্রছায়ায় হয়েছে। পূর্ব প্রথা বা সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসলে তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি। আর যদি কিছুদিন পর ফের হলগুলোতে পূর্ববর্তী বছরগুলোর মত র‌্যাগিং শুরু হয় তাহলে আজকের র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন করার শামিল হবে।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট’র সম্পাদক মাহাথির মুহাম্মদ বলেন, ‘হলের দ্বিতীয় বর্ষের সকল শিক্ষার্থী র‌্যাগ বা গেস্টরুম নির্যাতনের সাথে জড়িত নয়। খুবই স্বল্প সংখ্যক কিছু শিক্ষার্থী দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন অবস্থায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর র‌্যাগের নামে ভয়াবহ রকম নির্যাতন চালায়। এরা হলে ছাত্রলীগের আশ্রয়ে থাাকে এবং পরবর্তিতে ছাত্রলীগের রাজনীতি এরাই পরিচালনা করে।’