ঢাকা বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির গুলিতে নিহতের ঘটনায় রাবিতে মানববন্ধন


১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৮

ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির গুলিতে নিহতের ঘটনায় রাবিতে মানববন্ধন

ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)এর গুলিতে নিহতদের সুষ্ঠু বিচার ও পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠাকুরগাঁও জেলা সমিতির শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানায়।

তাদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত বিজিবি সদস্যদের শাস্তি প্রদান, নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরন ও আহতদের চিকিৎসা সেবা দেয়া, সীমান্তবর্তী এলাকায় সকল প্রকার চোরাচালান বন্ধ করা, সীমান্তবর্তী এলাকার জনগনের সাথে বিজিবি’র সহাবস্থান নিশ্চিতকরণ, বিজিবি কর্তৃক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

মানববন্ধনে ঠাকুরগাঁও জেলা সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সামান্য একটি গরুর জন্য তিনটি প্রাণ বিজিবি গুলি করে হত্যা করতে পারে না। বিজিবি সীমান্ত রক্ষার কাজ বাদ দিয়ে সাধারণ জনগনের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাবে এটা আমরা কখনোই মেনে নিবো না। আবার যারা হত্যাকান্ড চালিয়েছে তারাই আবার সাধারণ জনগনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এটা কি ধরণের প্রহসন? আবার জনগন মামলা করতে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন ধরণের গড়িমসি করছেন। তাই আমরা এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

আনিসুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে হত্যাকান্ডের সাথে বিজিবি’র সদস্যরা সরাসরি জড়িত। এমনকি তারা নিজেরাই চোরাচালানে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে সাধারণ জনগনের ওপর নির্যাতন  চালায়। সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় বিজিবির গুলোতে যারা নিহত হয়েছে তারা কেউ চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিল না। কেননা তাদের মধ্যে একজন ছিল ১২ বছরের শিশু, অন্যজন এলাকায় দুইটি কোচিংয়ে পড়ান এবং অন্যজন হলেন সাধারণ কৃষক। নিরীহ জনগনের ওপর বিজিবির এমন বর্বরতার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।’

হরিপুর উপজেলার বহরামপুর গ্রামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নবাব নামে যে শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে সে  অত্যন্ত মেধাবী। এলাকায় দুইটি কোচিংয়ে পড়ান। এমনকি তিনি এলাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কাজে নানাভাবে সহযোগিতা করেন। কিন্তু তাকে বিজিবি মাদক চোরাচালানকারী চিহ্নিত করে গুলি করে হত্যা করেছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ জনগন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে বিজিবি উল্টো ২৫০জনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। এমনকি যারা বিজিবির গুলিতে মারা গেছে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করে। তবে এই হত্যাকান্ডের তদন্ত জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন জমা দেননি।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের মার্স্টাসের শিক্ষার্থী মাহবুব রহমানের সঞ্চালনায় এছাড়াও বক্তব্য দেন, প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সভাপতি মনির হোসেন, রাবি শিক্ষার্থী ও ঠাকুরগাঁও  জেলা সমিতির সদস্য  আতিকুর রহমান, আনিসুর রহমান, ঈসমাইল হোসেন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১২ই ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বহরামপুর গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি গুলি  চালালে তিন জন সাধারণ জনগন নিহত হন। এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলে এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়।