ঢাকা সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


এবার জবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি


৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২৯

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ‘ইউনিট-২’ (মানবিক শাখা)-এর ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এক নারী পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২য় সেমিস্টারের ছাত্র ও তরিকুল ইসলাম গ্রুপের কর্মী জয়নুল আবেদীন ও একই বিভাগের শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের কর্মী মোবারক ঠাকুর প্রিস। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই শেষে তাদের পুলিশে সোপার্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার (৬অক্টোবর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে এমন ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক হয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের বেশ কিছু কর্মী বাধা দেয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল টিম এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ন্ত্রনে আনেন।

লিখিত অভিযোগ ওই নারী শিক্ষার্থী জানান, আমি পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞান অনুষদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় ওরা দুজন আমাকে ডেকে নিয়ে যৌণ হয়রানিমূলক আচরণ করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গাকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে নানা ধরণে কুরুচিমূলক মন্তব্য করেন। এতে আমি একজন নারী হিসেবে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পরে যাই। তিনি আরো জানান, শুধু অশালীন মন্তব্য করেই থেমে জাননি তারা। বরং আমি ওড়না পরিধান না করারও কারণ জানতে চায় এবং তারা মানিব্যাগ থেকে আমাকে ওরনা কেনার টাকা দিতে চায়। এসময় তারা আমার সাথে সর্বোচ্চরকম অশালীন কথাবার্তা বলেন।

এ বিষয়ে ওই নারী শিক্ষার্থীর অভিভাবক তার বড়বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, এমন আচরণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চরম হতাশাজনক। আজ এ দিনেও যখন নারীরা স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার রাখে না, এটা মেনে নেওয়া কষ্ট সাধ্য। আমি চাই আমার বোনের মত কারো সাথে এমন আচরণ করা না হোক। আমাদের চলাচলের নূন্যতম স্বাধীনতাটুকু নিশ্চিত হওয়াই আমাদের দাবী।

অভিযোগের বিষয়ে জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্রের বিরুদ্ধে একজন নারী ভর্তিচ্ছুর সাথে অশালীন আচরণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের কোতয়ালী থানায় সোপার্দ করেছি। এছাড়াও আগামী কর্মদিবসে সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ছাত্রলীগ কর্মীদের পুলিশের গাড়িটি অবরোধ করার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, আমি তাদের কোন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী বলবো না। যারা পুলিশের গাড়িটি অবরোধ করার চেষ্টা করেছিল তারা অভিযুক্তদেরই বন্ধু-বান্ধব ছিল। তারা চেয়েছিল যেন, ঘটনাটি ক্যাম্পাসেই মীমাংসা করা হয়।

অভিযুক্তদের পুলিশের হেফাযতে নেওয়ার বিষয়ে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশিউর রহমান বলেন, তারা থানা হাজতে রয়েছে। তবে যদি কেউ থানায় অভিযোগ না করে তাহলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। কারণ যাদের অভিযোগ তারা আমাদের কাছে না বললে আমরা কি ব্যবস্থা নেব আর কার বিরুদ্ধে নেব।

এমএ