ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


গার্মেন্টসে চাকরি করতে যাওয়া মেয়েটি ঢাবি ছাত্রী আজ


১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৩৭

ফাইল ফটো

নিজের অদম্য ইচ্ছা আর শিক্ষকদের অনুরোধ এবং সকলের সহযোগিতায় তিনি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। রিবারের অভাব অনটনকে সঙ্গী করে নিজের সুন্দর ভবিষ্যতকে নষ্ট করে নিতে বসেছিলেন এক ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত। পোশাক কারখানায় চাকরির সন্ধানে চলে যেতে চেয়েছিলেন সবকিছু ছেড়ে। নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের সাতগাঁও গ্রামে বেড়ে উঠা অদম্য মেধাবী শান্তনা রানী সরকারের কথা। এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার আদর্শনগরের শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ফাইভ পেয়ে এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে তিনি ৮৫০ তম স্থান অর্জন করেছেন।

ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে পড়াশোনা করতে হয়েছে শান্তনা রানী সরকারকে। এসএসসি পরীক্ষার আগে শান্তনার কৃষক বাবা সজল সরকার প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বাবার অসুস্থতা, ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ, অভাবের সংসার সবকিছু মিলিয়ে মেধাবী মেয়েটি বড় ভাইয়ের মতো পোশাক কারখানায় চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন। সে সময় শিক্ষকদের প্রেরণা ও সকলের সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকেন শান্তনা। তার এই অদম্য চেষ্টার সফলতা আসে এইচএসসি পরীক্ষায় শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে জিপিএ ফাইভ পাওয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মধ্যে দিয়ে তিনি তার স্বপ্নের আরও একধাপ এগিয়ে গেছেন।

শান্তনা সরকার জানান, তিনি ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করতে চান। তার স্বপ্ন পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করা। শুধু নিজের সংসারের অভাব ঘোচানোই নয়, দেশ ও সমাজের জন্য তিনি কিছু করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমার এই সাফল্যের জন্য আমি আমার পরিবার, কলেজের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের একান্ত চেষ্টাতেই এতটা পথ পাড়ি দিতে পেরেছি।’ সেইসঙ্গে তিনি শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসানের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘স্যার আমাদের এই হাওড়াঞ্চলে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করার জন্যই এলাকার সুযোগবঞ্চিত মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে। উনার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

নতুনসময়/এসএম