পুলিশকে ধাক্কা, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গাড়ি আটকে দিলেন সাংবাদিক (ভিডিওসহ) দেখুন

সিলেটে গত সোমবার লামাবাজার-শেখঘাট রোডের কুয়ারপাড় পয়েন্ট এলাকায় সড়কের মাঝখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাড়ি পার্কিং রেখে চালক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার ভিডিও নিয়ে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে।
জানা যায়, সোমবার বিকাল ৫টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিডি মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের গাড়ি প্রতিদিনের তাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে পুনরায় অফিসে ফেরার নগরীর পথে কুয়ারপাড় এস.এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিস অফিসের সামনে মূল সড়কের মাঝ বরাবর রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে উদাও হয়ে যান চালক মোমেন। এসময় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, আদালত থেকে আসামী বহনকারী পুলিশের প্রিজন ভ্যান ও জরুরী রোগী বহনকারী এম্বুলেন্স আটকা পড়ে। অনেকক্ষণ জ্যামে আটকা পড়ার পর পুলিশের প্রিজন ভ্যানের দ্বায়িত্বে থাকা এএসআই রাসেল শিকদার গাড়ি থেকে নেমে অবৈধভাবে রাস্তার মাঝখানে পার্কিং রাখা গাড়ির চালককে খুজতে থাকেন। প্রায় ১৫ মিনিট পর চালক দৌড়ে এসে গাড়িতে উঠে আগাইতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গাড়ি সাইড করার জন্য বলেন এতে চালক গাড়ি সাইড করার কথা বলেই পুলিশ সদস্যকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি সাইড না করে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে থাকা সলমান আহমদ চৌধুরী নামের একজন সাংবাদিক।বিষয়টি তিনি দেখে সাথে সাথে মোটরসাইকেল নিয়ে গাড়িটিকে আটকানোর জন্য এগিয়ে গেলে শেখঘাট পয়েন্টে যাওয়া মাত্র সাংবাদিক সলমান চৌধুরীর মোটরসাইকেলেও ধাক্কা দেয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গাড়িটি।
এতে পিছনে পড়ে যান তিনি। তবুও হাল ছাড়েন নি।জীবন বাজি রেখে মোটরসাইকেল নিয়ে দৌড়ে শেষ পর্যন্ত তালতলাস্থ সিলেট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসের গেইটের সামনে গিয়ে আটকে দেন গাড়িটি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় সাংবাদিক সলমান চৌধুরী পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে আসার কারণে উচ্চস্বরে প্রতিবাদ করছেন এবং বেশ কয়েকবার ধমক দেন চালককে। এ সময় উপস্থিত সাধারণ মানুষেরা চালকের উপরে ক্ষিপ্ত হয়।
খবর পেয়ে অত্র এলাকায় ডিউটিরত পুলিশের একটি দল এসে ঘটনাস্থলে পৌছে গাড়িটি নিরাপত্তার জন্য অফিসের গেইটের ভিতরে নিয়ে যায়। এ সময় গাড়ি চালক গাড়ি অফিসের ভিতরে নিয়ে গাড়ি বন্ধ করে দৌড় দিয়ে অফিসের ভিতরে ঢুকে পালিয়ে যান। এ সময় তার হাতে একটি ব্যাগ দেখা যায়। উপস্থিত সাধারণ মানুষের ধারণা চালকের হাতে থাকা ব্যাগে মাদক ছিল সেই কারণেই হয়ত তিনি পুলিশকে দেখে পালিয়ে এসেছিলেন।
https://www.facebook.com/chysolman/videos/289464181930291/
এ ব্যাপারে সিলেট অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবিরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে সরাসরি অফিসে ফেরার কথা পথিমধ্যে সে কেন দাঁড়াবে।আর যদি কোন প্রয়োজনে যদি দাঁড়ায়ও কিন্তু পুলিশের সিগন্যালে না দাঁড়ানো তার চরম অন্যায় হয়েছে। সে একজন সরকারী অফিসের গাড়ি চালক হয়েও আইন মানলো না এটা অবশ্যই অপরাধ।
সাধারণ মানুষের ধারণা চালক সরকারী গাড়ি ব্যবহার করে মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছেন বিধায়ই তিনি এইভাবে পালিয়ে এসেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে. তিনি বলেন,অবশ্যই না।সরকারী একজন কর্মকর্তা কিভাবে মাদকের ব্যবসা করবে। তবে তার এই ঘটনার জন্য তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আমি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ওই সাংবাদিক সলমান চৌধুরী জানান, প্রথমত চালকের অপরাধ রাস্তার মধ্যখানে পার্কিং করল,দিত্বীয়ত সে পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে গেল তৃতীয়ত সে আমাদেরকেও রাস্তায় ধাক্কা দিল। তখন মনে হলো সে পালিয়ে আসল।প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিক হিসেবে আমার উপর সমাজের বড় বড় দায়িত্ব রয়েছে। অপরাধী কিংবা আইন অমান্যদের মুখোষ খুলবো আমরা। হয়তো কোন কারণে বন্ধি হতে হয়, আবার কোন কারণে সমাজের কাছে আালোকিত হয়। একজন সরকারী চালক যদি এমন করে তাহলে সাধারণ চালকরা কি করতে পারে?। আমি দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি,যতদিন দেশে শান্তি,শৃঙ্খলা আসবে না ততদিন পর্যন্ত আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাবো। এই চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমি পিছপা হবো না। প্রধানমন্ত্রীসহ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি এদের আইনের আওতায় আনার জন্য।
নতুনসময়/আল-এম