নুসরাত রাফি হত্যা মামলায় নুর উদ্দিনসহ গ্রেফতার ৭

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় বিভিন্ন জেলায় বিশেষ অভিযানে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ ছাড়াও বাকি আসামীদেরকে গ্রেফতারের অভিযান চলমান রয়েছে। আজ শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হেডকোয়ার্টার্সে সংবাদ সম্মেলন করেন বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম,পিপিএম ।
এ সময় তিনি জানান, সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা গত ৯ এপ্রিল পিবিআই এর উপর অর্পিত হলে নুসরাত জাহান রাফির গায়ে অগ্নিসংযোগ করে হত্যার ঘটনার সঙ্গে ১৩ জনের সংশ্লিষ্টতা পায় পিবিআই। এর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ হত্যা মামলায় পিবিআই এর ৬টি ইউনিট অভিযান পরিচালনা করছে । তিনি আরও জানান, নুসরাতের গায়ে সরাসরি আগুন দেয় বোরকা পরিহিত যে ৪ জন তার মধ্যে এক নারীসহ দুই জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে । এ সময় বোরকা পরিহিত ৪ জনের মধ্যে ছেলে ও মেয়ে উভয়েই ছিল। তারা আগুন দিয়ে মাদ্রাসার মূল গেট দিয়েই পালিয়ে যায় ।
উল্লেখ্য মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা তাকে অনেক দিন ধরে যৌন নিপীড়ন করে আসছিল । এ ব্যাপারে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যায় নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। তাকে মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলে ভয় দেখানো হয়। পরে সেখানে বোরকা পরিহিত ৪ জন নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
সোমবার (৮ এপ্রিল) দগ্ধ মাদ্রাসা ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ঢামেকের ডাক্তাররা জানান, শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ১০ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার রাতে অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যায়।