ঢাকা শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রাজধানীতে নিউ জেএমবি’র দুই জন সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার


১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:১৫

নিউ জেএমবি’র দুই জন সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার

নিউ জেএমবি’র দুই জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের ওয়েবসাইট অ্যান্ড ই-মেইল ক্রাইম টিম। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ আল আমিন (২৭) ও শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদ (২৭)।

ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানানো হয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের ই-মেইলে একটি মেইল আসে যে, যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিং ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর কর্ম-পরিকল্পনা প্রনয়নের লক্ষ্যে কিছু লোক গোপন বৈঠক করছে।

সেই তথ্যের ভিত্তিতে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের ওয়েব সাইট অ্যান্ড ই-মেইল ক্রাইম টিম ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বিকাল সাড়ে চারটায় যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোঃ আল আমিন (২৭) কে গ্রেফতার করে। সেই সময় আরো দুইজন পালিয়ে যায়। আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদে সে তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার দক্ষিণগাঁও বলে জানায়।

গ্রেফতারকৃত আল আমিন জানায়, ‘Tonmoy Bakshi’ নামক ফেসবুক আইডিটি তার এবং পূর্বে এটি noyon chatterjee নামে সে ব্যবহার করত। এই আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন উস্কানী ও আক্রমণাত্মক লেখা পোস্ট করত। সে স্বীকার করে, সাইফ ওরফে বাবুলের হাত ধরে সে ২০১৫ সনে জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়। এরপর জঙ্গি সাইফ ওরফে বাবুলের মাধ্যমে উসামা ওরফে তাসকিনের সাথে তার পরিচয় হয় ও পরবর্তী সময়ে তার সাথে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঐসময়ে তাদের মাধ্যমে জঙ্গি আব্দুস সালাম, ফয়জুল্লাহ, মিলাদ দের সাথে তার পরিচয় হয়। তারা সমন্বিতভাবে বিভিন্ন নাশকতা কার্যক্রমের কর্ম-পরিকল্পনা প্রনয়ন ও সংঘটন করে। তারা পরস্পরের সাথে ম্যাসেঞ্জার, টেলিগ্রাম, থ্রীমা এ্যাপসের মাধ্যমে কথা-বার্তা বলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে যোগাযোগ করতো। তারা টেলিগ্রামে বাংলার মুজাহিদ, সালাউদ্দিনের ঘোড়া, সবুজ পাখি গ্রুপগুলো ব্যবহার করতো। তার ভাষ্যমতে উসামা ওরফে তাসকিন এবং সাইফ ওরফে বাবুল এর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আঃ সালাম, ফয়জুল্লাহ, মিলাদ দের নিয়ে সে নিউ জেএমবি’র কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

গ্রেফতারকৃত আল আমিন এর হেফাজত হতে ১টি গোল্ডেন কালারের শাওমি মোবাইল ফোন, ১টি কালো রংয়ের নোকিয়া মোবাইল ফোন, সিমকার্ডবিহীন ১টি কালো রংয়ের পুরাতন ভাঙ্গা ওয়ালটন মোবাইল ফোন ও কালিমাতুশ শাহাদাহ, সত্য কথন, প্রত্যাবর্তন, সংবিৎ, বৃষ্টি মুখর রৌদ্র মুখর, মুক্ত বাতাসের খোঁজে, তোমাকে বলছি হে যুবক, সুখময় জীবনের সন্ধানে, প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ, খুশূ খুযূ, সবুজ পাতার বন নামক বইগুলি জব্দ করা হয়।

আল আমিন আরও স্বীকার করে, সে নিউ জেএমবি’র সিলেট এলাকার আঞ্চলিক কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছে। পালিয়ে যাওয়া ২ জন ঢাকা অঞ্চলের নেতা, তাদের সাথে সংগঠনের (নিউ জেমেবি’র) কর্ম-পরিকল্পনা সংক্রান্তে গোপন বৈঠক করছিল। তার দেয়া তথ্য মতে সন্ধ্যা ১৫ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ডেমরার স্টাফ কোয়াটার এলাকা থেকে শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদ (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার দুর্লভপুর গ্রামে। তার হেফাজত থেকে একটি গোল্ডেন কালারের সিম্পনি এক্সপ্লোরার মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলা মোঃ আল আমিন এর নেতৃত্বে সে সহ আব্দুস সালাম ও ফয়জুল্লাহ সহকারে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করতো।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।