প্রশ্নফাঁস: দুদককে চিঠি দিয়েছে পিএসসি

প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেবে না সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। সংস্থার অভিযুক্ত পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব বরাবর চিঠি দিয়েছে পিএসসি।
বুধবার (১০ জুলাই) পিএসসির সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন-১) জমিলা শবনমের সই করা এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন— পিএসসি সচিবালয়ের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপপরিচালক মো. আবু জাফর, সহকারী পরিচালক এস. এম. আলমগীর কবীর, অফিস সহায়ক মো. সাজেদুল ইসলাম এবং ডেসপাচ রাইডার মো. খলিলুর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনের সই করা আদেশে এই পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এটি দুদকেরও বিষয়, কারণ এঘটনায় আর্থিক দুর্নীতির বিষয় রয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পিএসসির যে সম্মান রয়েছে, তা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর পিএসসি।
জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম চলছে, তদন্তে যার বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণ হবে, সে যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে পিএসসি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
বুধবার (১০ জুলাই) দুদকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারি কর্ম কমিশনে গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষা। ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করে পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র প্রকাশ এবং বিতরণ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী হিসেবে অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কমিশন সচিবালয়ের পাঁচ জনসহ অেন্যদের আসামি করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) উপ-পুলিশ পরিদর্শক পল্টন থানায় ২০২৩ সালের বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় পাঁচ জন কর্মচারী গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলে আটক আছেন। তাছাড়া, তাদের নিজ নামে ও তাদের পরিবারের সদস্যের নামে অসাধু উপায়ে অর্জিত ও তাদের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দখলে রেখেছেন বা মালিকানা অর্জন করেছেন, মর্মে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এভাবে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় তদন্ত করে উপযুক্ত আদালতে বিচার করতে মামলা দায়ের করার জন্য সাক্ষ্য প্রমাণাদি সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এমতাবস্থায় পিএসসির পাঁচজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্ম কমিশনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিএসসি সচিবালয়ের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চানদিয়া গ্রামে। উপপরিচালক মো. আবু জাফরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামে, সহকারী পরিচালক এস. এম. আলমগীর কবীরের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার কোলাহাট গয়ড়া গ্রামে, অফিস সহায়ক মো. সাজেদুল ইসলাম নেয়াখালীর চর জব্বর উপজেলার মধ্যচর বাটা গ্রাম এবং ডেসপাচ রাইডার মো. খলিলুর রহমানের গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার পাচাইর গ্রামে।