তুরাগে যুবলীগ নেতার উপর বিএনপি কর্মীর হামলা,মামলা নেয়নি পুলিশ

রাজধানীর তুরাগের চন্ডালভোগ এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা ও তার পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সপ্তাহ খানেক পেরিয়ে গেলেও থানায় মামলা দায়ের করতে পারেনি ভুক্তভোগী ওই পরিবার। ভুক্তভোগী ওই যুবলীগ নেতা হলেন ঢাকা উত্তর যুবলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সম্পাদক আবুল কালাম রিপন।
ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা প্রতিবেদককে জানান,
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিএনপি জামায়াত সমর্থিত কর্মী চন্ডালভোগ মধ্যপাড়ার মকবুল হোসেন,কুদ্দুস মিয়া,বাদশা মিয়া,আব্বাস মিয়া,বিলকিস বেগমসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জন আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে আমি সহ আমার বড় ভাই আবুল হোসেন (৫১) কে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে গুরুতর যখম করে তারা। আমার
অপর ভাই মো: আবু সাঈদ (৪৪), ও আমার ভাতিজা রানা (২২) আমাদের কে উদ্ধারের চেষ্টা করলে বিএনপি কর্মী ও মাদকাসক্ত কুদ্দুস
তাদের দাড়ির মধ্যে ধরে এলোপাথারি কিল ঘুষি মারতে থাকে। এই সময়ে আমাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন সহ ব্যবসার প্রতিষ্ঠানের ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলকারীরা পালিয়ে যায় । পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনা স্থলে মারাত্বক আহত আমার বড় ভাই আবুল হোসেন কে দ্রুত কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল এ চিকিৎসা জন্য নেওয়া হয়। যাহার চিকিৎসা সনদ আমাদের কাছে আছে। শুধু তাই নয় ঘটনা পর থেকে প্রতি নিয়ত হামলা কারীরা আমার পরিবারকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-দামকি দিতে থাকে। এই বিষয়ে তুরাগ থানায় অভিযোগ করতে গেলে গিয়ে দেখি পুলিশ হামলাকারীদের কাছ থেকে উল্টো লিখিত অভিযোগ গ্রহন করেছে। পরে আমরাও অভিযোগ করলে তা গ্রহন করে পুলিশ। দু'পক্ষের অভিযোগ নেয়ার পরে ঘটনাস্থলে আসে তুরাগ থানা পুলিশের এস আই মোশাররফ হোসেন। তিনি স্থানিয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জায়গার ছবি তুলেন। যাওয়ার সময় ২০ হাজার টাকা দাবি করে বলেন,ওসি স্যারকে দিতে হবে। আর না দিলে ওদের মামলা রুজু হয়ে যাবে। পরে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেও চা পান খাওয়ার জন্য পরিচিত বাবু নামের একজনের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা নিয়ে যায় পুলিশের ওই এসআই। সন্ধ্যায় হামলাকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে আমার বড় ভাইকে গ্রেফতার করে এস আই মোশাররফ। শুধু তাই নয় বাসায় ঢুকে আমার অন্যান্য ভাইদের না পেয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি পরের দিন আমি উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বদরুল হাসানকে জানাই ও লিখিত ভাবে মামলা নেয়ার জন্য উপপুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করি। কিন্তু সাতদিন পেরুলেও অজ্ঞাত ও কারণবশত মামলা নেয় নি পুলিশ। পরে জানতে পারলাম ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন এর উস্কানি ও পরামর্শে এ মিথ্যা মামলা রুজু করেছে তুরাগ থানা অফিসার ইনচার্জ মওদুদ আহমেদ।
তুরাগের চন্ডালভোগের স্থায়ী বাসিন্দা আবুল কাশেম ও রফিক বলেন,ঘটনার দিন আমরা উপস্থিত ছিলাম। হামলাকারীরা মামলায় যা বয়ান দিয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা বানোয়াট।
অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগ করা হয় ৫৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিনের সাথে। কিন্তু একাধিক বার ফোন করেও এবিষয়ে তার মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে জানতে তুরাগ থানা এস আই মোশাররফ হোসেনকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার কি সত্যতা পেয়েছেন জিগ্গাসা করলে তিনি বলেন তিনি সেখানে যান নি। পরে এ বিষয়ে সব জানেন ওসি স্যার বলে কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি। পরে যোগাযোগ করা হয় তুরাগ থানার অপারেশন ইন্সপেক্টর মফিজুল রহমান এর সাথে। তিনি বলেন বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন অফিসার ইনচার্জ। পরে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মওদুদ হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,দুটি মামলা নেয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু একটি মামলা হয়ে গেছে সেহেতু তারা কোর্টে মামলা দায়ের করতে পারে। অন্যথায় ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিনের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। কিন্তু এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সাথে কেনো কথা বলতে হবে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেন নি।
উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বদরুল হাসান বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে স্থানিয় কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তিনিও সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাই এক পক্ষের মামলা নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে যুবলীগের সহ-সম্পাদক আবুল কালাম রিপনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।