দেশেই আছেন বসুন্ধারা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভির

দেশেই আছেন বসুন্ধারা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভির। তিনি দেশের বাইরে কার্গো বিমানে করে যে পালিয়ে গেছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে তা সত্য নয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিমানবন্দরেরও বেশ কয়েকটি সুত্র নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্ত্যে এসব সুত্র বলছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই কার্গো বিমানে যাত্রী যাওয়ার রেকোর্ড নেই। শুধুমাত্র বিমানে ক্রুরা এই বিমানে যেতে পারে। আবার যে দেশে ক্রুরা যাই তারা সেখানে বিমানবন্দরের বাইরে যেতে পারে না। আর যদি ক্রু ব্যাতিত কোন সাধারন নাগরিক কার্গো বিমানে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ম্যানেজ করেও গিয়ে থাকেন তাহলে তারাও ঐ দেশের ভেতরে ঢুকতে পারবে না। যদি ঐ দেশে ঢুকতে চাই তাহলে তাকে ঐ দেশের সারকারের বিশেষ অনুমতি লাগবে।
এ বিষয়ে ইমিগ্রেশনের এডিশনাল এসপি খুরশিদ জাহান বলেন, কার্গো বিমানে শুধু বিমানের ক্রুরা যেতে পারে, আর কেউ যেতে পারে না।
অন্য কোন প্রকৃয়ায় সায়েম সোবহান দেশের বাইরে গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তার ( আনভীর) পাসপোর্ট মিলিয়ে দেখেছি সে যাই নাই।
এদিকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ছয়টি ডায়েরি ও দুটি মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব ডায়েরিতে কী লেখা আছে তা যাচাই করছে পুলিশ। মামলার আলামত হিসেবে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
এর আগে সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর গুলশান থানায় মামলা করেন তার বড় বোন নুসরাত জাহান।
এতে আসামি করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে। তার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাতে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামতের সঙ্গে ৬টি ডায়েরি পাওয়া যায়। এসব ডায়েরিতে কী লেখা আছে তা যাচাই করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ১ মার্চ ওই তরুণী একাই ফ্ল্যাটটিতে উঠেন। এক লাখ ১১ হাজার টাকা ভাড়া ছিল ফ্ল্যাটটির। প্রায় পৌনে দুই মাস সেখানে অবস্থান করেন মুনিয়া।
ডিসি আরও বলেন, ওই ফ্ল্যাটে মুনিয়া একা থাকার কথা বলা হলেও কে কে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকত তা জানতে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ডায়েরির সঙ্গে সেগুলো যাচাই চলছে।
সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, মামলার তদন্তের প্রয়োজনে সায়েম সোবহানের দেশ ত্যাগের বিষয়ে আদালতের কাছে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়, যা আদালত মঞ্জুর করেন।
'এখন আমরা অপেক্ষা করছি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য। আপাতত বিষয়টি হ্যাংগিং মনে হলেও প্রতিবেদন থেকে জানা যাবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।'
এরপরেই তদন্তের গতি নির্ধারণ হবে বলে জানান গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
অন্যদিকে মুনিয়ার মরদেহ কুমিল্লায় তার মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাদ আসর জানাজা শেষে শহরের টমছমব্রিজ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাতে গুলশান ২-এর ১২০ নম্বর সড়কের ওই ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি রাজধানীর একটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। একাই থাকতেন ফ্ল্যাটে। তবে তার পরিবার থাকে কুমিল্লা শহরে।