ঢাকা সোমবার, ৫ই মে ২০২৫, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২

মদত কার, প্রশ্ন মামুনুলের নিকট !


২০ এপ্রিল ২০২১ ০৭:২৬

ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এরপরই তাকে নিয়ে যাওয়া মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, কর্মকর্তাকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। গোয়েন্দাদের প্রশ্ন ছিল দেশব্যাপি পুলিশের উপর হামলা, থানা আক্রমন , সরকারী অফিস আক্রমনসহ যে তান্ডব চালানো হয়েছে এর মদদ দাতা কারা।

সূত্র জানায়, ওই সকল ঘটনার দ্বায় কোনভাবেই হেফাজত এড়াতে পারেনা। আর উস্কানি দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের রাস্তায় নামানোর মূল ছিলেন মামুনুল হক। এখন এ সকল করার উদ্দেশ্যে কি ছিল আর কার মদতে এগুলো হয়েছে সেগুলো জানতে চাওয়া হয়েছে।

তবে এগুলোর উত্তরে মামুনুল হক কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিয়েছেন। রিমান্ডের প্রথমদিন হওয়ায় এগুলো নিয়ে এখুনি মুখ খুলতে নারাজ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যমের নিকট তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা।
এদিকে সোমবার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল আদালতে মামুনুলকে হাজির করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামুনুলেল ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৬ মার্চ মোহাম্মদপুর সাত মসজিদ এলাকায় সাত গম্বুজ মসজিদে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামি মাওলানা মামুনুল হক ও তার ভাই মুহতামিম মাহফুজুল হকের নির্দেশে জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আসামি ওমর এবং ওসমান, বাদী ও তার সঙ্গে থাকা অন্যান্যদের মসজিদের ভেতর আমল করতে নিষেধ করে। তাদের ধর্মীয় কাজে আঘাত করে তাদেরকে আসামিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলে ।

বাদী তার প্রতিবাদ করলে মাওলানা মামুনুল ও তার ভাইয়ের নির্দেশে ওই মাদ্রাসার আরও ৭০/৮০ জন ছাত্র মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে। ওমর ও ওসমান তাদের হাতের লাঠি দিয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর আসামিরা বাদীর কাছে থাকা একটি স্যামসাং মোবাইল, নগদ ৭ হাজার টাকা, ২০০ ডলার ও ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ডেবিড কার্ডসহ বাদীর মানিব্যাগ নিয়ে যায় এবং পুনরায় মসজিদে প্রবেশ করতে দেখলে তাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয় আসামিরা।

মামুনুলের বিরুদ্ধে অত্র মামলায় জড়িত থাকার সাক্ষ্যপ্রমাণ প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মভীরু মুসলমান ও মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে উস্কে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

এর আগে রবিবার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মামুনুল হককে প্রথমে পুলিশের তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি মোদিবিরোধী আন্দোলনের সময়ও সহিংসতা করায় একাধিক মামলায় মামুনুল হকের নাম রয়েছে। প্রথমে তাকে পুরনো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। পরে একে একে সব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।