ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ হেফাজতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ


২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:৫১

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকায় পুলিশ হেফাজতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। তবে পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের পর অসুস্থতাজনিত কারণে ওই গৃহবধূ মারা গেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই গৃহবধূ মারা যান। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওই হাসপাতালের মর্গেই রাখা হয়েছে।

নিহত ইয়াসমিন আক্তার ভাওয়াল গাজীপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

নিহতের ছেলে আরাফাত রহমান জিসান বলেন, ‘তার বাবা আব্দুল হাইকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করতে গতকাল সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক নুরে আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাড়িতে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা বাবা আব্দুল হাইকে না পেয়ে কলাপসিবল গেট ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ডিবির সদস্যরা আমার মা ইয়াসমিনকে মারধর করে এবং গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

‘পরে বাজার থেকে এসে আমি মা’র মোবাইলে ফোন দিলে ডিবির সদস্যরা আমাকে ডিবি অফিসে যেতে বলে। কিছুক্ষণ পর তারা আমাকে ডিবি অফিসে না গিয়ে হাসপাতালে যেতে বলেন। হাসপাতালে গেলে পুলিশ আমাকে ভেতরে যেতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তারা জানায়, আমার মা মারা গেছেন।’

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মঞ্জুরুল হক পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদক বেঁচাকেনার খবরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভাওয়াল গাজীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে মাদক মামলার আসামি ইয়াসমিনকে ১০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা ইয়াসমিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ইয়াসমিন মারা যান। ইয়াসমিন ও তার স্বামী আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক আইনে মামলা রয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টায় ইয়াসমিনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ইসিজি ও এনজিওগ্রাম করার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।’

এক পর্যায়ে রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান। হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলেও জানান এই চিকিৎসক।