ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নিকেতনের ফ্ল্যাটে নিয়ে মনোরঞ্জনের পর চলতো ব্ল্যাকমেইল


১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:২৩

ফাইল ফটো

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বড় বড় প্রকৌশলীদের নিয়ে। গুলশানের নিকেতনে টেন্ডার মাফিয়া জি কে শামীমের ৭/৮টি ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যে আসর বসত। সেখানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হত। গোপন ক্যামেরায় আপত্তিকর দৃশ্য ধারণ করে পরবর্তীতে জি কের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করা হতো তাদের। এক সময় যুবদলের নেতা কীভাবে যুবলীগে পুনর্বাসিত হয়েছেন, কীভাবে টেন্ডার বাগিয়ে নিতেন এর সবকিছুই কবুল করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জি কে শামীম নিজের জিকে বি অ্যান্ড কোম্পানির নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ নিলেও আরও ৫টি কোম্পানির নামে অন্তত আরও ২০ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিয়েছেন। ওই কোম্পানিগুলোতেও তার রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে হলো, জামাল কনস্ট্রাকটিং লি., পদ্মা কনস্ট্রাকশন, মজিদ অ্যান্ড সন্স, হাসান অ্যান্ড সন্স, পায়েল কনস্ট্রাকশন।


এদিকে জি কে শামীমের ১০ সহযোগীকে খুঁজছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। র‌্যাব-পুলিশের কাছে দুই দফায় ১৯ দিনের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তার কাছ থেকে এবং বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া নানা তথ্যের ভিত্তিতে এই ১০ জনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। ওই ১০ জন যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখছে র‌্যাব-পুলিশ। সবকটি স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরে থাকছে বিশেষ নজরদারি।

সূত্র আরও বলছে, গণপূর্তসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দরপত্র আহ্বান করার পরপরই জি কে শামীমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সজল এসবের মনিটরিং শুরু করতেন। কোন কোম্পানি টেন্ডারে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিত সেগুলোর মালিককে হুমকি দিত সজল। পরে জি কের আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী রণক ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদের নীরব হুমকি সমেত বিভিন্ন কৌশলে ম্যানেজ করত। সঙ্গে থাকত রানা মোল্লা, জন, মিলন, সজল, দিদার, রনি, বাবু, মিল্টন। তবে জি কে শামীমের অনুপস্থিতিতে সবকিছুর সমন্বয় করতেন তার বড় ভাই নাসিম।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, দেখুন জি কে শামীম আমাদের কাছে ৯ দিনের রিমান্ডে ছিলেন। ওই সময় আমরা বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। এখন সেগুলোর যাচাই-বাছাই চলছে। তবে যাদেরই সম্পৃক্তরা পাওয়া যাবে তাদেরই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। জানা গেছে, বাসাবো এলাকায় আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জনের নামে জি কে শামীম অন্তত ২০টি বাড়ি কিনেছেন। এর মধ্যে অন্তত ৪টি তার নিজের নামে রেজিস্ট্রি করা।

ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে ক্যাসিনো-জুয়াবিরোধী অভিযানের মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। তখন শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়।

নতুনসময়/এসএম