হলি আর্টিসানের মত দেশে সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি সম্ভব হবেনা- মনিরুল ইসলাম

বাংলাদেশের মানুষ একটি অসাম্প্রদায়িক কালচারে বিশ্বাস করে এখানে কখনও জঙ্গিবাদ মাথা চড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। আইন শৃংখলা রক্ষার পাশাপাশি ডিএমপি’র উদ্যোগে নাগরিক তথ্য সংগ্রহ, সরাসরি অভিযান, মানুষের মধ্যে সচেতনতাবোধ তৈরি, সকলকে সম্পৃক্ত করে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এইগুলোর মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করি সমবেত প্রচেষ্টার মাধ্যমে হলি আর্টিসান বা অন্যকোন সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি সম্ভব হবে না। জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশে পরিনত হবে।
সোমবার সকালে গুলশান হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন ডিএমপি’র ভারপ্রাপ্ত কমিশনার কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
হলি আর্টিসানে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মনিরুল ইসলাম বলেন, আজ হলি আর্টিসান বেকারি সেই ভয়াবহ ও নৃশংস হামলার তৃতীয় বার্ষিকি। ৩ বছর আগে ২০১৬ সালে ১ জুলাই এই দিনে হলি আর্টিসানে ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস হামলা সংঘটিত হয়েছিল। তাতে আমাদের দুইজন পুলিশ অফিসারসহ ২২ জন নিহত হয়েছিলেন। নিহত ও আহতদের পরিবারে প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই এই হামলাটির সাথে জড়িত নব্য জিএমবি’র প্রায় সকলেই আমাদের বিভিন্ন অভিযানে হয় নিহত হয়েছে নতুবা গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছে। তাদের বিচার কাজ চলছে। আমরা আশাবাদী খুব তাড়াতাড়ি সেই বিচার প্রক্রিয়া শেষে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। যাতে করে যেসব পরিবারে সদস্য মারা গেছেন তাদের অপুরণীয় ক্ষতির মধ্যেও তারা কিছুটা মানসিক শান্তি পায়। পাশাপাশি ডিএমপি’র পক্ষে আমরা চেষ্টা করছি হলি আর্টিসানের মত এই ধরণের ভয়াবহ হামলার পুনরাবৃত্তি যাতে ঢাকা ও বাংলাদেশে না ঘটে এবং সেলক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
বাংলাদেশের জঙ্গিদের বর্তমান অবস্থা কি? আমরা কি জঙ্গিবাদ নির্মূল বলতে পারি? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মনিরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিদের যে সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠেছিল সেটিকে আমরা অপারেশনের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু জঙ্গিবাদ বা জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী লোকের সংখ্যা, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও তাদের প্রতি সমর্থন জানায় এখনও এমন কিছু কিছু লোক রয়ে গেছে। ফলে তারা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কখনও কখনও মাথাচড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করে। সেটি যাতে না উঠতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা নাগরিক উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানিয়েছি এবং আমাদের সরাসরি আইন প্রক্রিয়া অর্থাৎ অভিযান, গ্রেফতার বা তাদের আদালতে সোপর্দ করছি। পাশাপাশি সকল ধরণের নাগরিক উদ্যোগের মাধ্যমে এই জঙ্গিবাদের মতবাদকে পরাস্থ করে ভবিষ্যতে যেকোন ধরণের জঙ্গি হামলা ঠেকাতে এবং পুনরায় মাথাচড়া দিয়ে উঠার যেকোন প্রচেষ্টাকে নৎসাত করে দিতে সক্ষম হবো।
বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে কতটুকু ঝুঁকিতে আছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় প্রেক্ষাপটে বড় কোন ঝুঁকির মাত্রা না থাকলেও ছোট খাটো ঝুঁকি বা হামলা বাংলাদেশে যাতে না ঘটাতে পারে সেলক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। কাজেই সুনির্দিষ্ট কোন হামলার তথ্য না থাকলেও সকলকে সতর্ক থাকতে হবে এবং আমরা সমবেত চেষ্টার মাধ্যমে যেকোন হামলার প্রচেষ্টাকে রুখে দিতে পারব।
এসময় ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নতুনসময়/আইএ