নানির কাছ থেকে পাওয়া ৫০ টাকায় ভাগ্য বদলালেন রহিম

নানির কাছ থেকে পাওয়া মাত্র ৫০ টাকাকে পুঁজি করে ব্যবসায় লেগে পড়েন দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো: আব্দুর রহিম (৩২)। রহিম কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের খাঁন পাড়া (সিডির মোড়) গ্রামের মো: মোশারফ হোসেনের পুত্র।
জানা যায়, রহিমের নানি তার মেয়ের পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতা দেখে নাতি রহিমকে ১৯৯৮ সালে মাত্র ৫০ টাকা ব্যবসা করার জন্য দেন। রহিম সেই ৫০ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু পান, সুপারী, বিড়ি, সিগারেট ও পাউরুটি কিনে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার শুরুতে অর্থের অভাবে পণ্যের যথেষ্ঠ যোগান দিতে না পারায় সামান্য বিক্রিতে পেট চালানো তার পক্ষে ছিল অসম্ভব। খেয়ে না খেয়ে রহিম রাত দিন ব্যবসায় ধৈর্য্যরে সাথে শ্রম দিতে শুরু করেন। সততা ও নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করায় এলাকার ক্রেতাদের নজর কাড়ে ব্যবসায়ী রহিম। এমনি করে দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে রহিম প্রতিষ্ঠা করেন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স রকেট ষ্টোর। রহিম কারো দ্বারস্থ না হয়ে সময় ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসার মুনাফা দিয়ে ভ্যারাইটিজ ব্যবসার পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোডসহ বিকাশ ও রকেট সেবা চালু করেন। নানা মুখী সেবা পাওয়ায় মেসার্স রকেট ষ্টোরে প্রতি মুহূর্তেই বাড়তে থাকে ক্রেতাদের আনাগোনা। এমনি করে রহিম তার ব্যবসা থেকে উপার্জিত মুনাফা দিয়ে ৪ বিঘা জমি ক্রয়, ৪ রুম বিশিষ্ট পাকা বাড়ি ও ১টি ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল ক্রয় করেন। বর্তমানে তার প্রতিদিনের বিক্রয় প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
আব্দুর রহিম জানান, জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। অনাহারে অর্ধাহারে থেকে দিন যাপন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছি। দুর্দিনের সেই স্মৃতির কথাগুলো মনে পড়লে এখনো কেঁদে উঠি।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসা থেকে আয়কৃত টাকা দিয়ে বেশ ভালোভাবেই দিন অতিবাহিত করছি। আল্লাহর রহমতে আজ আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমার ১টি ছেলে ও ১টি মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি। আমি চাই তারা যেন আমার মতো ভুক্তভোগী না হয়ে ভালোভাবে লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আমার মুখ উজ্জ্বল করে।
এ বিষয়ে যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আইয়ুব আলী সরকার বলেন, আব্দুর রহিম অত্যন্ত সৎ ও পরিশ্রমী ছেলে। সে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে গিয়ে জীবনে অনেক কষ্টের সম্মুখীন হয়েও কখনও পিছপা হননি। আমি আশা করি এলাকার বেকার যুবকরা তাকে অনুসরণ করবে।
নতুনসময়/এনএইচ