ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


‘বাচ্চাদের নিয়ে অনেক খারাপ সময় পার করছি’


১০ আগস্ট ২০২২ ২৩:৩১

ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সেলিম প্রধানকে দেখতে বুধবার আদালতে আসেন স্ত্রী আনা প্রধান (রাশিয়ান)।

এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে অনেক খারাপ সময় পার করছি।

বুধবার (১০ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের করা অবৈধ সম্পদ ও মানিলন্ডারিং আইনের মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। কিন্ত এদিন আদালতে কোন সাক্ষী উপস্থিত হয়নি। এজন্য আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৭ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন।

এদিন সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতে আসেন সেলিম প্রধানের স্ত্রী আনা প্রধানও। সকাল ১১টার দিকে সাক্ষী না আসায় সেলিম প্রধানকে আদালতের এজলাসে থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে আনা প্রধান বলেন, স্বামীর জন্য আইনি লড়াই করে যাবো। স্বামীকে মুক্ত করতে লড়াই করে যাবো। এটি একটি সাজানো, বানানো মামলা। এই সাজানো মামলা থেকে স্বামীকে অব্যাহতির জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

তিনি বলেন, আমার ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে অনেক খারাপ সময় পার করছি। করোনাভাইরাস ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে আসতে দেরি হয়েছে। আমি স্বামীর মুক্তি চাই।

উল্লেখ থাকে, গত ১৩দিন ধরে স্বামীর মুক্তির জন্য বাংলাদেশে অবস্থান করছেন আনা প্রধান।

সেলিম প্রধানের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম বলেন, আমরা সেলিম প্রধানের মুক্তির জন্য আইনি লড়াই করে যাচ্ছি। আশা করি, সেলিম প্রধান ন্যায়বিচার পাবেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে এসে স্ত্রী আদালতে আসলেই যে সেলিম প্রধান মুক্তি পাবেন এমন কিন্তু নয়। এর আগে অনেক মামলায় অনেকেই বাইরের দেশ থেকে আদালতে আসছেন। তেমন কোনো লাভ হয়নি। তবে আমরা আশা করি, সেলিম প্রধান ন্যায়বিচার পাবেন।

মামলাটিতে এখন পর্যন্ত মোট ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় তার বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

গত বছর ১৭ জানুয়ারি মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান। চার্জশিটে ৫৭ কোটি ৭৯ লাখ ২৮৮ টাকার জ্ঞাতআয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২১ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ১৪৫ হাজার টাকা থাইল্যান্ড ও ইউএসএতে পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

গত বছর ৩১ অক্টোবর সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।

এর আগে সেলিম প্রধানকে ২০১৯ সালেল ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে র‌্যাব-১। এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নগদ ২৯ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে হরিণের চামড়া পাওয়া যায়। ওইদিনই সেলিম প্রধানকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান। পরদিন গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মানিলন্ডারিং আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব। ওই মামলাগুলোয় তাকে কয়েক দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে। এ মামলায়ও তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।