বাঘায় সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি কৃষক !

রাজশাহীর বাঘায় গত বোরো মৌসুমে সময়সীমা বর্ধিত করার পরেও কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করেনি। কারণ বাজারে ধানের দাম বেশি ছিলো। এবার একই চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে গম সংগ্রহের ক্ষেত্রে। এর প্রধান কারণ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। যার চিত্র লক্ষ করা গেছে মঙ্গলবার সকালে বাঘায় অভ্যান্তরীন খাদ্য শস্য সংগ্রহের জন্য কৃষকদের নিয়ে উন্মুক্ত লটারী অনুষ্ঠানে।
সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলা সভাকক্ষে নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে এ লটারী অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড: লায়েব উদ্দিন লাভুল-সহ খাদ্য শস্য ক্রয় কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দ। সেখানে লক্ষ করা গেছে , সভার দু’দিন পূর্বে পর-পর তিনদিন মাইকিং করার পরেও কোন কৃষক উপস্থিত হয়নি। যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই ব্যবসায়ী মহল।
এলাকার কৃষকরা বলছেন, দুই মাস পূর্বে যখন জমি থেকে গম কাটা শুরু হয় তখন যদি সরকারী ভাবে গম সংগ্রহ করার নির্দেশ আসতো তাহলে কৃষকরা সরাসরি গম দিতে পারতো। কিন্তু এখন কোন কৃষকের বাড়ীতে গম পাওয়া যাবেনা। কারণ আমাদের কাছ থেকে আগামিতে গমের দাম কমে যাওয়ার নামে মৌজুদ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে গম ক্ষরিদ করে নিয়েছেন। এখন খাদ্য গোডাউনকে গম সংগ্র করতে হলে মৌজুদ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকেই সংগ্রহ করতে হবে।
বাঘার বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কাছে ব্যবসা-বাণিজ্যে সিন্ডিকেট নেতিবাচক আর আতঙ্কের এক শব্দ। এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ শুধু বাজারে পণ্যের দামের কারসাজিতেই সীমাবদ্ধ নয়।এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে সরকারও। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করছি ধান-চালের মৌজুদ ব্যবসা করে চালের বাজার অস্থিতিশীল করে রেখেছেন কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। একই অবস্থা পেঁয়াজ,রসুন, চিনি, সয়াবিন-সহ অন্যান্য ব্যবসায়। তাঁর মতে, সরকার যদি এসব মৌজুদ ব্যবসায়ীদের উপর ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে অর্থ দন্ড করেন তাহলে সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম সাভাবিক থাকবে।
বাঘা খাদ্যগুদাম র্কমর্কতা আলী আশরাফ বলনে, করোনা সংকট সহ পারিপার্শিক বিভিন্ন কারণে গত বছর মেলার মালিক-সহ কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কৃষকদের উৎপাদতি ধান কিনে গুদাম জাত রেখেছেন। যে কারণে সময়সীমা বর্ধিত করার পরও আমরা ধান সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে এবার কৃষকরা গম সরবরাহ করতে অক্ষমতা প্রকাশ করলে সরকারি মুল্য ৩০ টাকা কেজি হিসাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গম ক্রয় করা হবে।
বাঘা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শামসুনাহার বলেন, আমরা প্রতিবারের ন্যায় আজ (২৭-এপ্রিল) অভ্যান্তরীন খাদ্য শস্য সংগ্রহের জন্য উন্মুক্ত লটারী করেছি। এ বছর বাঘা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন এবং ২ টি পৌর সভা থেকে ৪ হাজার ৬ শ’ জন কৃষক সিলেকশান হয়েছে। এর মধ্যে লটারিতে ৫৮৫ জন কৃষকের নাম উঠেছে।এসব কৃষকদের কাছ থেকে ৩ টন হিসাবে ১৭৫৫ টন গম ক্রয় করা হবে।