ঢাকা মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


নেত্রকোনায় ট্রলার ডুবির দুদিন পর ভেসে উঠল একজনের লাশ


১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৬

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় গত বুধবার ট্রলার ডুবির ঘটনায় দুজন নিখোঁজ থাকার দুদিন পর শুক্রবার একজনের লাশ ভেসে ওঠে। বেলা ১১টার দিকে নেত্রকোনার বারহাট্টা ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার সীমান্তে হলুদিয়া বিলে রতন মিয়া (৩৫) নামে ব্যক্তির লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয় ও স্বজনরা উদ্ধার করে।

অন্যদিকে ৫ বছরের শিশু মনিরা আক্তার এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

এদিকে গেল এক মাসে জেলার দুটি উপজেলায় ট্রলার ডুবিতে ৩০ জনের প্রাণহাণি ঘটল। আর অনিরাপদ অপ্রতিরোধ্য নৌ চলাচলের জন্যই এসব ঘটছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। নৌযান চলাচলে কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় প্রতিনিয়ত এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও জানান তারা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকালে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থেকে যাত্রীবাহী ফরহাদ মেম্বারের ট্রলারটি অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে নেত্রকোনার ঠাকুরোকোনার উদ্দেশ্যে। গোমাই নদী দিয়ে আসার পথে কলমাকান্দার রাজনগর এলাকায় একটি বলগেটকে (বালু-পাথর বহনকারী) অতিক্রম করতে গেলে সংঘর্ষে যাত্রীবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। দুজন নিখোঁজ রয়ে যায়। এ ছাড়া বাকি যাত্রীরা তীরে সাঁতরে উঠেন।

নেত্রকোনায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল না থাকায় দুর্ঘটনার ১২ ঘণ্টা পর কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে ডুবুরি দল আসে। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অভিযান চালিয়েও না পেয়ে দুজনকে নিখোঁজ রেখেই রাত ৮ টায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলার মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী, কলমাকান্দা, বারহাট্টা, আটপাড়া, কেন্দুয়াসহ বেশিরাভাগ উপজেলার বিস্তর এলাকা নিয়ে হাওর অঞ্চল। বর্ষা মৌসুমে হাওরাঞ্চলের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম নৌপথ। বছরের পর বছর ধরে নৌপথে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করলেও নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেইসঙ্গে বালু, পাথর, বহনকারী কয়েক হাজার বলগেট ট্রলার বছরজুড়েই বিভিন্ন স্থানে ঘাট ইজারার নামে চাঁদা দিয়ে অনিয়মতান্ত্রিকভাবেই দেশের বিভিন্ন জেলায় মালামাল পরিবহন করে আসছে।
আর এমন অভিযোগ অনেক পুরনো। জেলায় ছোট-বড় ৫৭ টি নদীর মধ্যে সবসময়ের খরস্রোতা কংশ, ধনু, গোমাই, কুমারখালি, উব্ধাখালি, ধলাইসহ বিভিন্ন নদীতে এসব মালামাল পরিবহন করে সারা বছর। এসবের নেই কোনো লাইসেন্স বা ফিটনেস। চালকরাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অদক্ষ। যার ফলে এমন দুর্ঘটনায় বছরজুড়েই দু- একজন করে মারা যাচ্ছে।

তবে এবারই প্রথম জননিরাপত্তা ও নৌপথে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক কাজি আব্দুর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুসনী।