কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ই মার্চ উপলক্ষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত কুমার চক্রবর্তী (টুটুল) এর উদ্যোগে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষ্যে ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ২০২০” কলাভবনের চারুকলা বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ মোহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ সুখন, সহকারী অধ্যাপক ফখর উদ্দিন সৈকত, প্রভাষক দিদারুল হোসাইন লিমন। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলে।
১৯৭১ সালের আজকের (ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ) এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখনকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভায় স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রাক্কালে পরাধীনতার শিকলে বন্দি বাঙালি জাতি যখন স্বাধীনতার জন্য অধীর অপেক্ষায়, তখন- গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি; ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এমন কাব্যিক ভাষায়ই সেদিন স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ডাকে জেগে উঠেছিল মুক্তিপাগল বাঙালি জনতা। পেয়েছিল স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। মুক্তিকামী বাঙালি নিয়েছিল চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ স্বাধীনতার ইতিহাসে মহামূল্য এক অধ্যায়। ৭ মার্চও তেমনি বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। একাত্তরের এই দিনে স্বাধীনতার মহানায়ক রেসকোর্স ময়দানে তাঁর ১৯ মিনিটের ভাষণে সাড়ে সাত কোটি নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেছিলেন। আগুন জ্বালিয়েছিলেন কোটি প্রাণে।
বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণকে ২০১৭ সালে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ স্থান দিয়েছে ইউনেসকো। এ প্রসঙ্গে ইউনেসকো তার ওয়েবসাইটে লিখেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বাঙালি জাতীয়তাবাদী নেতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ ছিল কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা।
ইউনেসকো তার ওয়েবসাইটে আরো লিখেছে, উপনিবেশ থেকে মুক্ত হওয়া জাতিরাষ্ট্রগুলো অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে ব্যর্থ হয়ে কিভাবে বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জনগণকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, তার যথার্থ প্রামাণ্য দলিল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণ ছিল তাত্ক্ষণিক, লেখা দেখে তিনি ভাষণ দেননি। তবে তাঁর ওই ভাষণ অডিও ও অডিও ভিজ্যুয়াল (এভি) সংস্করণে এখনো টিকে আছে।
নতুনসময়/আইকে