ভুয়া মানবাধিকার সংস্থার চাঁদার দাবি ও বাড়ি ভাংচুর করায় আদালতে ওয়ারেন্ট

সাভার-আশুলিয়ায় " আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও গোয়েন্দা সংবাদ সংস্থা" নামে একটি ভুয়া সংগঠন স্থানীয় বাড়ির মালিকদের কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদার অর্থ দিতে অস্বীকার করলে গত বৃহস্পতিবার (বেকু) ইস্কাভেটর দিয়ে অস্ত্র থানার ঘোষবাগ নয়নজুড়ি খাল এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ৫ টি বাড়িঘর ও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ওই সংস্থার ভাড়াকৃত মস্তানরা। বাধা দিতে গেলে হত্যার হুমকি দেয় তার। এ ঘটনায় থানায় জিডি করে গতকাল ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার পর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে বিজ্ঞ আদালত । মামলা নং ঢাকা জর্জ কোর্ট ১৭৪/২০২০, এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞ আদালত। আশুলিয়া থানা জিডি নং ২১১১/তাং ২২.০২.২০২০,
ঘটনার প্রত্যাক্ষদর্শী ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপরোক্ত কথিত মানবাধিকার সংস্থার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মালেক খান এর নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীদের ভুয়া পরিচয় দিয়ে উক্ত এলাকায় ড্রেন নির্মাণের কথা বলতে থাকে । এসময় তারা বলে যদি তাদের চাহিদা মত চাঁদা না দেওয়ায় তাহলে সেখানে বহুতল ভবনসহ সব স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হবে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গত বৃহস্পতিবার কোন নোটিশ সতর্কবাণী ছাড়াই একটি বেকু নিয়ে দিনে দুপুরে স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয় এসময় এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এমনকি তাদের ঘরের কোন মালামাল সরাতে সময়টুকু দেয়নি চক্রটি। তখন ঘটনাস্থলে কোন পুলিশ প্রটেকশন ছাড়াই উপস্থিত ছিলেন আশুলিয়া উপজেলার এসিলেন্ট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাফী ইবনে সাজ্জাদ। সাংবাদিক পরিচয় এসিল্যান্ড এর কাছে ফোন দিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুরের সরকারি নোটিশ ও পুলিশ প্রটেকশন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি । একটু পরেই তিনি ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। তারপর ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে বেকুর ড্রাইভার ও সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যান ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষে মামলার বাদী মোঃ হান্নান মিয়া জানান, আমরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছি, এখানে সরকারি খাস জমি বা অবৈধ কোন স্থাপনা ছিলনা, তারপরও এই লতিফ মোল্লার নেতৃত্বে একটি ভুয়া সিন্ডিকেট এদিক দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করা হবে তাই স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে ভয় দেখিয়ে আমাদের সবার কাছে চাঁদা দাবি করে, পরে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা হঠাৎ করে আমাদের ব্যক্তিমলিকানাধীন স্থাপনা ভাঙচুর করে ফেলে। উপযুক্ত দলিল ডকুমেন্ট নিয়ে স্থানীয় এসিল্যান্ড কে ও বিষয়টি অবহিত করি কিন্তু তারা আমাদের কোন কথা শুনেননি। এমনকি স্থাপনা ভাঙ্গার আগে কোন হদিস দেয়নি। এই ভাঙচুরের কারণে আমাদের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে বর্তমান যেখানে পানি নিষ্কাশনের জন্য যে কালভার্ট আছে সেখান দিয়ে যদি ব্যবস্থা করা হয় তাহলে কোন স্থাপনা বাড়িঘর ভাঙ্গা পড়ে না কিন্তু তারা জনগণের দাবি উপেক্ষা করে বাইপাস করে যেখানে বাড়িঘর স্থাপনা আছে সেখান দিয়ে পানি নিষ্কাশনের নির্মাণ করার ঘোষণা দেন। এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করতে গেলে মাননীয় বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রের দেশে এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে। এসময় মোঃ হান্নান মিয়া আরও বলেন, আমরা সকল ক্ষতিগ্রস্ত মালিক গন যেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায় সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে অত্র উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাফী সাজ্জাদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় এলাকাবাসীর অনুরোধে ড্রেন নির্মাণ করার জন্যই বাড়িঘর স্থাপনা ভেঙ্গে দিন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এই বাড়িঘর স্থাপনা উচ্ছেদ ও ড্রেন নির্মাণের সরকারি কোন নথিপত্র বা আদেশ নামা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদক কে জানান , বিষয়টি আমার নজরে এসেছে এবং ভুক্তভোগী পক্ষ থানায় জিডি করেছে এবং আদালতে ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে মামলা করেছে এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।