ঢাকা শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


শরীয়তপুরে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণে অনিয়ম, চেয়ারম্যানের ব্যাপক দুর্নীতি


৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩৫

ছবি সংগৃহীত

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নে ভূমি মন্ত্রনালয়ের অধীনে গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ প্রকল্প ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার নিজ ক্ষমতার বলে প্রকল্প সভাপতি ও ঠিকাদার নিযুক্ত হয়ে এই অনিয়ম করছেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জনিয়েছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ভূমি মন্ত্রনালয়ের অধিনে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের মীরা কান্দি এলাকার গৃহহীনদের জন্য ১০টি ঘর নির্মাণ প্রকল্প গ্রহন করেছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার সেই প্রকল্পের সভাপতি ও ঠিকাদার। ঠিকাদার অতিরিক্ত লাভবান হওয়ার জন্য ঘর নির্মানের সকল স্তরে অনিয়মের আশ্রয় গ্রহন করেছেন।

এখন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। টিন দিয়ে চাল ও বেড়া ঢেকে ফেলা হয়েছে। টিনের পুরুত্ব ৩৬ মিলিমিটার (এমএম) ব্যবহার করার নিয়ম ছিল। সেক্ষেত্রে ৩২ এমএম পুরুত্ব টিন ব্যবহার করেন ঠিকাদার। কর্তৃপক্ষ কম পুরুত্বের সেই টিন মেনে নিতে নারাজ থাকায় নতুন করে আবারও অনিয়মের আশ্রয় করেছে ঠিকাদার সভাপতি। তিনি ঢাকা থেকে টিনের সীল ঘষামাজা ও স্টীকার পরিবর্তন করার জন্য রনি ও বলাই নামের দুই জন লোক নিয়ে আসে। তারা ৩১ জানুয়ারী শুক্রবার ভোররাত থেকে ৩২ এমএম টিনের সীল ঘষে সেখানে ৩৬ এমএম স্টীকার লাগায়। বেশীরভাগ টিন ঘষামাজা ও স্টীকার পরিবর্তন শেষে স্থানীয় লোকজনের কাছে ধরা পরে যায় সেই ঘষামাজা ও সীল পরিবর্তনকারী লোকজন। তারা চেয়ারম্যানের সাথে চুক্তি করে এই কাজ করছে জানিয়ে ও স্থানীয়দের কাছে ক্ষমাচেয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।টিনের সীল ঘষামাজা ও স্টীকার পরিবর্তনের সময় স্থানীয় লোকজনের কাছে ধরা পরা বাক্তি স্থানীয় জানান শুরু থেকেই নির্মাণ কাজে ব্যপক অনিয়ম হচ্ছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার কাজ দেখাশুনা করে তাই স্থানীয়রা কিছুই বলত না। গত শুক্রবার দেখা যায় কয়েকজন অপরিচিত লোক পার্শ্ববর্তী রহিম খার বাড়ি থেকে ছেড়া কাপর এনে কেমিকেল দিয়ে ঘষে টিনের শীল উঠায়। পরে দেখা যায় ৩২ এমএম সেই টিনে নতুন করে ৩৬ এমএম সীল লাগায়। বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হলে সীল পরিবর্তনকারী সেই লোকেদের চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার নিয়োগ করছেন বলে জানিয়ে পালিয়ে যায়। যারা এই ধরনের দূর্ণীতির করে গরীব মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাদের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিলও করেন স্থানীয়রা। এই সময় ঘরের দরজায় ঠিকাদারের লাগানো তালার উপর স্থানীয়রা নতুন করে তালা লাগায়। এই বিষয়ে চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর ছোড়া অনিয়ম অভিযোগের কমতি নেই। গ্রামবাসীর দাবি যারা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গরিব অসহায় মানুষদের সাথে এরকম অন্যায় অবিচার করে তাদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি হোক। শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা স্বপন মাতুব্বর বলেন, গুচ্ছ গ্রামের প্রকল্পে কোন অনিয়ম করার সুযোগ নাই। ৩২ এমএম টিনের সীল ঘষে ৩৬ এমএম করা হয়েছে এমন প্রমাণ পেলে তা পরিবর্তন করানো হবে। হয়তো কর্তৃপক্ষকে ভুল বোঝানের জন্য এই কাজ করছে।