রংপুরে শীতে ২১ জনের মৃত্যু

বরাবরের মতই বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলে শীতের তীব্রতা সবসময়ই বেশি দেখা যায়। রংপুর বিভাগে ড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। গত সোমবার পর্যন্ত দুই মাসে এ বিভাগে এ-সংক্রান্ত স্বাস্থ্য জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছে ২১ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে শৈত্যপ্রবাহে নাকাল রংপুর বিভাগে গেল ৬৮ দিনে ঠান্ডাজনিত রোগে ও আগুনে দগ্ধ হয়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ।। শীতে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকদের। শীতের তীব্রতা বাড়ায় জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ঠান্ডাজনিত নানা রোগ আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শীতে উষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন প্রায় শতাধিক। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের পরিসংখ্যান বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সূত্র মতে, হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত রংপুর বিভাগ। এই বিভাগের আট জেলায় প্রচণ্ড শীতে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় নিম্নবিত্ত ও চরাঞ্চলে শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে ঘটেছে শতাধিকের মত অগ্নিদগ্ধের ঘটনা। এতে রমেক হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের পরিসংখ্যান বিভাগের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, গেল ৬৮ দিনে রংপুর বিভাগের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেওয়া তথ্যে শীতজনিত রোগে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে রমেক হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মাহফুজার রহমান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে। এদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছে। বেশিরভাগ রোগীই ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছেন। অন্যদিকে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোস্তফা খালেদ আহমেদ জানান, গত ১ নভেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ছাড়াও রংপুর বিভাগে ডায়রিয়ায় ১১ হাজার ১০৯ জন, এআরআই রোগে ৪ হাজার ৩৯৮ জন ও শীতজনিত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৫০৭ জন। এদের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হলেও বেসরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। শীতজনিত রোগ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, রংপুর বিভাগে শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে ৭২২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।