ঢাকা রবিবার, ১৮ই মে ২০২৫, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


ভৈরবে মৌমাছির সাথে ১ পরিবারের ৭ বছর যাবত বসবাস


২ জানুয়ারী ২০২০ ২৩:০৩

ছবি সংগৃহীত

ভৈরবে পয়ত্রিশটি মৌচাকের মৌমাছির সাথে সাত বছর যাবত বসবাস করে আসছেন একটি পরিবার। প্রতি মুহুর্তে হাজার হাজার মৌমাছির আনাগোনায় গুনগুন শব্দে মূখরিত এই বাড়ির চারিপাশনে। মৌমাছিগুলো আপন মনে ষরিসার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে ফিরছে চাকগুলোতে। বাড়ির মালিক চাঁক থেকে মধু সংগ্রহ করে পরিবারের খাবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করছেন স্থানিয় বাজারে। চাঁক ভাঙ্গা মধু পাওয়া যায় বলে বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যান অনেকে। সরেজিমিনে দেখা যায়, ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের জগমোহনপুর গ্রামের হাজি বুদাই ব্যাপারীর দুইতলা বাড়ির চারিপাশ জুড়ে রয়েছে প্রায় পয়ত্রিশটি মৌচাক। এ বাড়িতে প্রায় সাত বছর যাবত পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশটি মৌচাক রয়েছে। এ মৌচাকের সাথেই এবাড়ির পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন হাজী বুদাই ব্যাপারী। বাড়ির ভবনের কার্নিশ, রেলিংয় এবং বাড়ির বিভিন্ন গাছে চাক তৈরি করে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করতে থাকে। সরিষার মৌশুমে এ সকল মৌমাছিগুলো এ বাড়িতেই চাক তৈরি করে আসছে প্রায় সাত বছর যাবত। প্রতি বছরই মৌশুম শেষ হলে মৌমাছিগুলো চলে গেলেও আবার সরিষার মৌশুম এলেই এ বাড়িতেই মৌমাছিগুলো চাক বাধে। এ সকল চাক থেকে প্রতি সপ্তাহ পনের দিন পর পর মধু সংগ্রহকারিরা এসে মধুর চাক ভেঙ্গে মধু নিয়ে যায়। চাক ভাঙ্গার পর যে পরিমান মধু পাওয়া যায় তা থেকে অর্ধেক তারা নেয় বাকি অর্ধেক বাড়ির মালিককে দিয়ে যায়। বাড়ির মালিক হাজী বুদাই ব্যাপারী বলেন, প্রতি বছর শীতের শুরতেই মৌমাছিরা এসে এ বাড়িতে চাক বাধে। বিশেষ করে সরিষার মৌশুমে মৌমাছিরা আসতে থাকে। প্রথমে পাচ থেকে দশটা। পরে ধীরৈ ধীরৈ চাকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সরিষার মৌশুম শেষ হতেই মৌমাছিগুলো আবার চলে যায়। মৌশুমের শুরুতে আবার ফিরে আসে এখানে। গোটা বাড়ি জুড়েই দেখা যায় মৌচাকের সমারোহ। এই মৌচাক দেখতে প্রতি দিনই পথচারিরা বাড়িতে ভীড় জমায়। মধু বিক্রি করে বেশ লাভবান হওয়ায় বাড়ির মালিক চাকগুলো বাধার সময় কোন বাধা দেননা। নিরাপদ ভেবে মৌমাছিগুলোও বারবার এবাড়িতেই চাক তৈরি করে এবং বংশ বিস্তার করতে থাকে।


ছেলে আবু তালেব বলেন, আমাদের বাড়িতে প্রতিদিনই মানুষ আসে মধুর চাক দেখতে এতগুলো মধুর চাক থাকা সত্বেও মৌমাছি কারো ক্ষতি করেনা। কেউ যদি চাকে ঢিল না ছুড়ে অথবা বাঁজ পাখি ছোঁ না মাড়ে ততক্ষণ পর্যরÍ মৌমাছি কাউকে কামরায়না। প্রতিবার চাক ভেঙ্গে আমরা ত্রিশ থেকে চল্লিশ কেজি মধু পেয়ে থাকি। প্রতি কেজি মধু পাঁছ থেকে ছয়শ টাকা দরে বিক্রয় করে থাকি। এ মধু বিক্রয় করে প্রতি মৌসুমে আমরা ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে থাকি। বাড়ির গৃহিনীরা বলেন, মৌমাছিগুলো বাসার দরজায়ও চাক বাধতে চেষ্টা করে। বাচ্চাদেরসহ আমাদের কামড়াবে বলে আমরা বাধা দিতে থাকি। ফলে আর দরজায় চাক বাধতে পারেনা।


প্রতিবেশিরা বলেন, এ বাড়িতে প্রতি বছর মধুর চাক বাধায় এখন বুদাই ব্যাপারীর নাম মুছে যেতে বসেছে। মানুষ রশিকতা করে এখন এ বাড়ির করছে মধু বাড়ি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আলম শরীফ খান বলেন, আগানগন ইউনিয়নের জগমোহনপুর গ্রামের হাজি বুদাই ব্যাপারির বাড়িতে বিগত ৭ বছর যাবত ষরিসার মৌশুমে ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশটি মৌচাক বসে। এ বছরও একই বাড়িতে প্রায় পয়ত্রিশটি মৌচাক বসেছে। এ মৌচাক থেকৈ সপ্তাহে প্রায় পঞাশ কেজির মত মধু আহরণ করে থাকে। এ বাড়ি থেকে খাটি মধু পাওয়ায় যায় বলে এলাকাবাসি অত্যন্ত খুশি।