প্রতিবন্ধি সিহাবের পাশে যদি কেউ এগিয়ে আসতো

বুদ্ধি ও শারিরীক প্রতিবন্ধি শিশু সিহাব কাজী (১০)। কে পিতা-মাতা তা বোঝার মত বধশক্তি তার নেই। মা শিউলী বেগম অন্যত্র বিয়ে করে নতুন স্বামীকে নিয়ে আনন্দে দিন কাটাচ্ছে। বাবা বিয়ে করে সংসার করছে। কিন্তু অসহায় শিশু সিহাবকে দেখাশুনার মত কেউ নেই।
জানা গেছে, নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার পাইকড় গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর পুত্র আশরাফুল ইসলামের সহিত রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিকদারী গ্রামের সানোয়ারের কন্যা শিউলী খাতুনের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সংসার জীবনে বিয়ের একটি পুত্রশিশু জন্ম হয়।কিন্তু সন্তানটি বুদ্ধি ও শারিরীক প্রতিবন্ধি হয়।এর পর বাচ্চাটির বয়স ১৮ মাস হলে প্রথম স্বামী আশরাফুলকে ডির্ভোস দিয়ে অন্যত্র বিয়ে বসে শিউলী খাতুন। তার কিছুদিন বাদেই প্রতিবন্ধি সিহাবের বাবাও বিয়ে বরেন। বাবা-মা নতুন সংসার পেলেও সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয় প্রতিবন্ধি সিহাব।পরে বাচ্চাটি সে সময় হতে অদ্যবধি সিহাবের বাবার দাদী বৃদ্ধা মেহেরজান বেগম প্রতিবন্ধি সিহাব দেখাশুনা করতেন। এর মধ্যে পিতা-মাতা কেউ খোঁজখবর নিতেন না প্রতিবন্ধি শিশু সিহাবের। বর্তমানে মেহেরজান বেগম ভিষণ অসুস্থ্য। ফলে প্রতিবন্ধি শিশু সিহাবের পার্শে দাড়ানোর মত তেমন কেউ নেই। ইতিমধ্যে সিহাবের বাবা রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার পত্রপুরে অবস্থিত যমুনা জুটমিলে কর্মরত আছে এমন খোঁজ পেয়ে গত ২৮ শে ডিসেম্বর প্রতিবন্ধি শিশু সিহাবকে সাথে নিয়ে পিতার খোঁজে মোহনপুরে আসেন চাচা ইসলাম কাজী ও ফুফু মুক্তা বেগম। পিতাকে খোঁজে পাওয়ার পরেও পিতার কাছে ঠাঁই হলো না প্রতিবন্ধি শিশু সিহাবের । পিতা আশরাফুল সাফ জানিয়ে দেন আপন সন্তানের দায়িত্ব নিতে পারবেন না । এবং ছোট ভাই ইসলাম কাজী ও বোন ফুফু মুক্তা বেগমকে সিহাবকে নিয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন পাষন্ড জন্মদাতা আশরাফুল। অবশেষে প্রতিবন্ধি শিশুটিকে নিয়ে অন্যের বাড়ীতে রাত কাটিয়ে পরের দিন (অর্থাৎ রবিবার) সকালে চাচা ও ফুফু শিশুটি নিয়ে মোহনপুর থানায় হাজির হয়ে অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক আহমেদকে বিস্তারিত অবগত করলে তিনি সিহাবের পিতাকে ডেকে পাঠান।সেখানেও সন্তানকে তার কাছে রাখতে অপারগতা প্রকাশ করে থানা হতে কৌশলে পালিয়ে যায়।
পরে মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ প্রতিবন্ধি শিশু সিহাব কাজীর সমাজসেবা অধিদপ্তরের সেফহোমে রাখার জন্য সর্বাত্বক টেষ্টা করেন। কিন্তু বাচ্চাটির মা-বাবা জীবিত থাকার কারনে ব্যর্থ হন।অবশেষে প্রতিবন্ধি সিহাব কাজীর চাচা ইসলাম কাজী ও ফুফু মক্তা বেগমের সাথে আত্রাই পাঠানো হলো।প্রতিবন্ধি সিহাব কাজীর চাচা ইসলাম কাজী ও ফুফু মুক্তা বেগম জানান, আমরা ঢাকায় গার্মেন্টস চাকরি করি।এতদিন আমাদের দাদী সিহাবকে দেখাশুনা করত। তিনি অসুস্থ্য হওয়ায় এখন কে দেখাশুনা করবে।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, প্রতিবন্ধি সিহাব কাজীর পিতা থানায় না আসায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে প্রতিবন্ধি সিহাব কাজীকে সমাজসেবা অধিদপ্তের মাধ্যমে সেফহোমে হস্তান্তর করার টেষ্টা করি। পিতা-মাতা জীবিত থাকার জন্য সেখানে রাখা যাইনি। পরে শিশুটির চাচা ও ফুফুর সহিত পাঠানো হয়েছে।