ঢাকা রবিবার, ১৮ই মে ২০২৫, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


হাড় কাঁপানো শীতের চাদরে ডেকে গেছে রাজশাহী


২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৭

ছবি সংগৃহীত

রাজশাহীর সব উপজেলায় প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ সেই সাথে শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে যাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জরুরী কাজ ছাড়া এক শ্রেণীর মানুষ ঘর হতে বের হচ্ছেনা। তীব্র এই শীতে বিশেষ করে দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা ও চরম দূর্ভোগ। কারণ এই শ্রেণীর মানুষগুলো শীতের জন্য ঘরে বসে থাকলে, অনাহারে থাকতে হবে। তাই তারা প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে পেটের দায়ে অন্যদিনের ন্যায় খুব ভোরে ঘর হতে বাহিরে যাচ্ছে জীবন জীবিকার তাগিদে।
শনিবার (২১ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৮৯ শতাংশ। এবং গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু শীতের দাপট আরো বেড়ে গেছে।
গতকাল শনিবার সকাল সুর্য্যরে দেখা না মিলায় আর সাথে ঘন কুয়াশা একটানা হিমেল বাতাসে মানুষকুলের সাথে প্রাণিকুলের দুর্দশাকে আরো একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।


অন্যদিকে প্রচন্ড শীতের প্রভাবে বৃদ্ধ ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বিভন্ন রোগে ,জর সর্দি,কাশি, এ্যাজমা,বাত ব্যাথা এর মতো নানান ব্যাধি। প্রবীণ ব্যাক্তি মজের আলী ও আব্দুর রশিদ উভয়ের বয়স ষাট উর্ধে , তারা জানান বেশি শীতের কারনে কমর ও হাটুর ব্যাথা বেড়েছে। এ্যাজমা রোগি আসলাম উদ্দিন জানান শ্বাসকষ্ট বেড়েছে, আগে ইনহেলার দুইদিন পর পর নিলে হত। কিন্তু শীত বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন দু বার নিতে হচ্ছে ।
পানচাষি জফির উদ্দিন বলেন, তীব্র শীতে পান গাছে এক প্রকার ভাইরাসে আক্রান্ত মারা যাচ্ছে এবং জমিতে চাষকৃত আলু, শরিষা, গম, টমাটো, পিয়াজসহ বিভিন্ন শস্যের সমস্যা হচ্ছে এবং শীতের তীব্রতা জনিত কারনে ধানের বীজতলায় পচন ধরার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
শীত বাড়ায় উচ্চ আয়ের মানুষগুলো বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেটে অভিজাত থেকে কিনছে শীতের কাপড় আর নি¤œআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ গুলো ভিড় করছে ফুটপাতের হকার্স পট্টীতে গরম কাপড় কেনার জন্য। কাপড় কিনতে আসা অনেকেই জানায় কয়েক দিন আগেই যে কাপড়ের দাম ছিল ৮০/১২০ সেটা এখন ১৮০/৩০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
মানুষের সাথে তীব্র শীতের প্রকোপে গবাদি পশু পাখি, গরু, ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
মোহনপুর উপজেলা স¦াস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে শীতজনিত কারনে ভর্তি রোগির সংখ্যা তেমন বাড়েনি। হাসপাতালের বহি বিভাগে একটু বেড়েছে, চাহিদা মত ঔষধ সরবরাহ আছে। রোগিদের সঠিক ভাবে চিকিৎসা ও ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে। তবে শীত যদি এরকমই থাকে তাহলে রোগির সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। উপজেলায় এ পর্যন্ত শীতজনিত রোগে হাসপাতালে কেউ মারা যায়নি।