ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


মই’তে আটকে যায় পা, সেফটি বেল্টের চাপে থেঁতলে যায় পেট


৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:১০

ফাইল ছবি

এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী সোহেল রানা। ২৩ তলা ওই ভবনে আটকা পড়া মানুষদের ল্যাডারের মাধ্যমে নামাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ করে মই’তে আটকে যায় রানার ডান পা, একে একে ভাঙ্গতে থাকে ডান পায়ের গোড়ালির হাড়গুলো। তবুও শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন বিপদে পড়া মানুষগুলোর হাত। যারা তার হাতে হাত রেখে নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল তখন।

একসময় সেফটি বেল্টের চাপে পেটের একটি অংশ থেঁতলে গেলে হার মানেন রানা। তবে এরই মধ্যে নিরাপদে ল্যাডারে উঠিয়ে দেন আগুনে আটকে থাকা বিপদগ্রস্থ মানুষগুলোকে। এতগুলো জীবন তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সেই সোহেল রানা আর ফিরতে পারলেন না নিজ পরিবার পরিজনের কাছে। সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৭ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

গত ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে আটকা পড়া মানুষের জীবন বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হওয়া কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান সোহেল রানার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চৌগাংগা গ্রামে। পরিবারের বড় ছলে রানা ২০১৫ সালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, বাস্কেট বেশি উঠে যাওয়ায় একটি ফ্লোরে আটকা পড়া মানুষগুলোকে নামাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন সোহেল রানা।
“সে তখন মই বেয়ে নামতে যায়। কিন্তু ওই অবস্থায়ই মই চলতে শুরু করলে রানার ডান পা আটকে গিয়ে কয়েক জায়গায় ভেঙে যায়। সেফটি বেল্টের চাপে পেটের একটা অংশও থেঁতলে যায়।”
দুর্ঘটনার পরপরই সোহেল রানাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রতিদিন চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হচ্ছিল না। পেটের ক্ষতের কারণে সমস্যা হচ্ছিল তার।

সে কারণে সিএমএইচের চিকিৎসকদের পরামর্শে গত শুক্রবার রানাকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। রানার দেখাশোনা করার জন্য ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রায়হানুল আশরাফকেও তার সঙ্গে পাঠানো হয়।

নতুন সময়/এসইউএ