যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের সাথে কিছু আসনে সমঝোতায় যাচ্ছে বিএনপি
প্রায় দেড় ডজন আসনে থাকছে না ধানের শীষের প্রার্থী। কারণ সেগুলোতে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করবে দলটি। আলোচনা শেষে শিগগিরই এই সংক্রান্ত ঘোষণা আসবে।
সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনা না করে প্রার্থী ঘোষণা করায় বিএনপির সাথে টানাপড়েন চলছে দীর্ঘদিনের মিত্রদের। সে আগুনে আরও ঘি ঢালে দ্বিতীয় ধাপে ৩৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা। সেই তালিকায় অন্তত ৮টি আসনের দাবিদার ছিলেন ছোট দলের বড় নেতারা। এতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে কেউ কেউ বিএনপি সঙ্গ ত্যাগের ঘোষণাও দিয়ে বসেন।
এ বিষয়ে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, বিএনপির সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক আমরা ছিন্ন করেছি। বিএনপির সাথে আমাদের জোটগত কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা দুর্বল বলেই তো আমরা সবলের কাছে গিয়েছিলাম।
ইরানের বক্তব্যেই পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ করা যায়। তাই আস্থাভাজন শরিকদের সাথে তড়িঘড়ি করে বৈঠকে বসে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। দ্বিতীয় ধাপে জোটের শীর্ষ নেতাদের সাথে আলাদা করে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। যেখানে নির্বাচনী পরিবেশ, জনসমর্থন ও নিজেদের সক্ষমতা, প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা ও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার মতো বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের সারসংক্ষেপ তারেক রহমানের কাছে পাঠানোর পর চূড়ান্ত হবে কারা হচ্ছেন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গী।
এরইমধ্যে বিএনপির পরীক্ষিত মিত্র মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা জামাল হায়দার, জোনায়েদ সাকি, নুরুল হক নুর, রাশেদ খান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের চার শীর্ষ নেতার আসনে এখনও ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। তবে এহসানুল হুদা, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, আহসান হাবিব লিংকন ও সাইফুল হকের মতো জোটের শীর্ষ নেতাদের আসনে এরইমধ্যে প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। এতে কি ঐক্য সুসংহত থাকবে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আন্দোলন তো কেউ বিএনপির জন্য করেনি। করেছিল শেখ হাসিনাকে পতনের জন্য। এখন যদি তারা (শরীক) দেশকে ভালোবাসে, তবে কখনই ঐক্য ছেড়ে যাবে না। তিনি প্রশ্ন রাখেন, যদি কোনো এলাকায় কোনো নির্দিষ্ট দলের যোগ্য প্রার্থী না থাকে,তাহলেও কি তাকে দাঁড় করিয়ে আমি ফেল করাব নির্বাচনটা?
অন্যদিকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, একসঙ্গে রেইনবো গভর্মেন্ট, সরকার গঠন, এগুলো কি তবে কথার কথা ছিল? পোস্ট ইলেকশনে যে পলিটিক্যাল ক্যানভাস, এই পরিস্থিতি কোনো দল একা মোকাবেলা করার মতো বাস্তবতা এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নাই।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার মতে, এই সময়ে ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থটাকেই বড় করে দেখা উচিত এবং তাদেরও (বিএনপি) অনুধাবন করা উচিত, ছোট হই আমরা কিন্তু আমাদেরকেও তাদের লাগবে। এই সময়টায় আমাদেরকে যদি তারা ছুড়ে ফেলে দেওয়ার চিন্তা করে, সেটা তাদের জন্য আত্মঘাতী হবে।
