ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৫, ৩রা পৌষ ১৪৩২


বোরহানউদ্দিনে কালের কণ্ঠ সাংবাদিকের ওপর হামলা


২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১২:২৭

সংগৃহীত

এইচ.এম.এরশাদ, বোরহানউদ্দিন(ভোলা) প্রতিনিধিঃ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নে জায়গাজমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করায় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার ভোলা প্রতিনিধি পরাণ আহসানের ওপর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে গুরুতর আহত সাংবাদিক পরান আহসানকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাচড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দরুন বাজার এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান,

সন্ধ্যার দিকে লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়ন থেকে সংবাদ সংগ্রহ শেষে মোটরসাইকেল যোগে ভোলা সদরে সাংবাদিক পরান আহসান আসার পথে বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউনিয়নের দরুন বাজার এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব পরিচিত স্থানীয় কয়েকজন তাকে থামিয়ে সামনে জমিজমা দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে বলে জানায়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে নেমে মোবাইল বের করে বিষয়টির ভিডিও ধারনের চেষ্টা করেন সাংবাদিক পরান আহসান । তখন সাচড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক সিরাজ হাওলাদারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে সেখানকার যুবলীগনেতা কামাল হাওলাদার, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা মো. জামাল হাওলাদার, মোসা. শিখা, ছাত্রলীগ নেতা রবিন, দলু হাওলাদারসহ আরো ৭-৮ জন মিলে দা এবং লাঠিসোটা নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তিনি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও হামলাকারীরা তাকে এলোপাথারি ভাবে পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে পাশে থাকা পুকুরে ফেলে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে পুকুর থেকে টেনে তুললে সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে পুনরায় আবারও তার ওপর হামলা চালিয়ে তার হাতে থাকা মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মোবাইল না দেওয়ায় তাকে গলা চেপে ধরে মাটিতে ফেলে ও দ্বিতীয় দফায় মাটিতে ফেলে এলোপাথারি মারধর করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করেন।

সাংবাদিক পরাণ আহসান জানান, লালমোহন উপজেলা থেকে সংবাদ সংগ্রহ শেষে মোটরসাইকেলে ভোলায় ফেরার পথে স্থানীয় কয়েকজন তাকে জানায় যে দরুন বাজার এলাকায় জমিজমা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। সেখানে পৌঁছে তিনি ঘটনাস্থলের ভিডিও ধারণ শুরু করলে সাচড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক সিরাজ হাওলাদারের নির্দেশে স্থানীয় যুবলীগ নেতা কামাল হাওলাদার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. জামাল হাওলাদার, মোসা. শিখা, ছাত্রলীগ কর্মী রবিন ও দলু হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন দা, লাঠিসোটা নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

তিনি আরও জানান, “আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তারা থামেনি। বরং আমাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করলে আবারও তারা হামলা চালিয়ে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং হত্যার হুমকি দেয়।”

এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭–৮ জনকে আসামি করে মামলা করি তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, বোরহানউদ্দিন আঞ্চলিক প্রেসক্লাব, জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন এবং ভোলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান জানান, হামলার ঘটনায় সাংবাদিক পরান আহসান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে