বেনাপোলে এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে অর্ধশত কোটি টাকার পণ্য ও ১৫ লক্ষ পিচ ব্লেড আটক

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারতীয় তিনটি ট্রাক থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য ও ১৫ লক্ষ পিচ ব্লেড আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
???? ২৫ দিন পর পরীক্ষণে বেরিয়ে আসে জালিয়াতির রহস্য
জানা গেছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ভারতীয় ট্রাক WB02C-5921, WB33D-1027 এবং WB11C-3133 বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আশিকুল ইসলাম এন্ড সন্স, এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট হুদা ইন্টারন্যাশনাল, বেনাপোল, যশোর।
মানিফেস্ট নং ছিল ৬০১/২০২৫/০০৩/০০৬১২৪৭/০৯। ঘোষণায় পণ্যের ধরন উল্লেখ করা হয় “স্টিল আইটেম অ্যান্ড আদার্স” এবং ওজন ৩০,৮৩৮ কেজি।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এনএসআই সদস্য মো. শফিকুর রহমান ও মো. ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে পণ্যবাহী ট্রাক তিনটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটক করে এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নবনির্মিত কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালে বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় রাখা হয়।
???? কাস্টমসের গড়িমসি ও ডকুমেন্ট জালিয়াতি
তবে রহস্যজনক কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ২৫ দিন ধরে ট্রাকগুলোর পরীক্ষণ করেনি। এই সময়ের মধ্যে আমদানিকারক পক্ষকে ডকুমেন্ট পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর আজ ২২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে অবশেষে কাস্টমস পরীক্ষণ সম্পন্ন করে।
পরীক্ষণে দেখা যায়, আগের ডকুমেন্টে ব্লেড আমদানির কোনো উল্লেখ ছিল না, কিন্তু নতুন ডকুমেন্টে ৯ লক্ষ পিচ ব্লেড দেখানো হয়। বাস্তবে পাওয়া যায় ১৫ লক্ষ পিচ ব্লেড, সাথে বডি স্প্রে, কাজল, পারফিউম তেল, জেল পেনসহ বিভিন্ন অঘোষিত পণ্য।
এতে স্পষ্ট হয় যে, কাস্টমসের কিছু অসৎ কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
???? এনএসআইয়ের ভূয়সী প্রশংসা
এনএসআইয়ের তৎপরতায় পণ্য জালিয়াতির এ অপকর্ম উদ্ঘাটিত হওয়ায় বেনাপোল বন্দরে সর্বমহলে প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার, স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম আহমেদ, সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক লতা, এবং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমানসহ বিভিন্ন মহলের ব্যবসায়ীরা এনএসআইয়ের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
তারা বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা বেনাপোল স্থলবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। তাদের অভিযানে সরকারের শত কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।