ঢাকা শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


এসএসসি পরীক্ষার নাম পরিবর্তন হতে পারে


২৮ মার্চ ২০২৪ ১৩:০১

সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। তবে নতুন শিক্ষাক্রমে এ পাবলিক পরীক্ষার নাম পরিবর্তন করা হতে পারে। নতুন নাম কি হবে তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণির মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দশম শ্রেণি শেষে মাধ্যমিকে যে পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়ন হবে, তাতে লিখিত পরীক্ষাও থাকছে। প্রকল্পভিত্তিক কাজ, অ্যাসাইনমেন্ট সমস্যার সমাধান ইত্যাদির পাশাপাশি একটি অংশের মূল্যায়ন হবে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে।

তবে এই লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেওয়ার ধরন এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর হবে না। একজন শিক্ষার্থী যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, সেগুলোই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে বলা হবে। এ জন্য প্রশ্নও করা হবে তার আলোকে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) পাবলিক পরীক্ষার যে মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া করেছে, তাতে এভাবে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ বছর যারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারাই নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো পাবলিক পরীক্ষা দেবে।

আগামী বছর দশম শ্রেণি শেষ করে তারা এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেবে। এ জন্য চলতি বছরের শেষে পরীক্ষামূলকভাবে পাবলিক পরীক্ষার আদলে নবম শ্রেণির বার্ষিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এনসিটিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এখন এই খসড়ার ভিত্তিতে মূল্যায়ন কাঠামো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাবলিক পরীক্ষাগুলো হয় শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বয় কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, মূল্যায়নপদ্ধতি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি ভালো কিছু হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

গত বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রথম বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন এই শিক্ষাক্রম শুরু হয়। আর এ বছর নতুন করে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতেও চালু হয়েছে এই শিক্ষাক্রম। পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিক্ষাকালীন)। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন এবং বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে।

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কাঠামো নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অস্পষ্টতা আছে। অভিভাবকদের একটি অংশ মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যায়ন কাঠামোয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটিও করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে মূল্যায়নপদ্ধতির খসড়া তৈরি করেছে এনসিটিবি। সেখানে নতুন শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেটের মতো পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কেমন করে হবে, সেটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।

জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, তাঁরা মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়াটি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করার জন্য গঠিত কমিটির সামনে ইতিমধ্যে উপস্থাপন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, খুব তাড়াতাড়িই সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে এটি চূড়ান্ত হবে।

এনসিটিবির সূত্রমতে, দশম শ্রেণি শেষে হবে এই পাবলিক পরীক্ষা। তবে নামটি এখনকার মতো মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষাও থাকতে পারে, আবার ভিন্ন নামও হতে পারে। নামের বিষয়টি এখনো ঠিক হয়নি। এত দিন নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হতো। নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এই মূল্যায়ন বা পরীক্ষা। ১০টি বিষয়ের প্রতিটির ওপরই হবে এই মূল্যায়ন। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়ন হবে বিদ্যালয়েই শিখনকালীন। বাকি আরেকটি অংশের মূল্যায়ন হবে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীন। এখনকার মতোই কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা ঠিক করে হবে এই পরীক্ষা। শিখনকালীন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন সমান গুরুত্ব পাবে।

মূল্যায়নের খসড়া অনুযায়ী, কেন্দ্রীয়ভাবে যে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন কার্যক্রম হবে, তাতে প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে এক কর্মদিবসের সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টায়। বিরতি দিয়ে হবে এই পরীক্ষা। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় থাকবে। মানে হাতে-কলমে শেখার বিষয়টি মূল্যায়ন করা হবে। আরেকটি অংশে থাকবে লিখিত পরীক্ষা। সেখানে লিখিত উত্তরপত্র ব্যবহার করা হবে। লিখিত পরীক্ষার অংশ বিষয়ভেদে এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টাও হতে পারে। সময়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিভিন্ন শ্রেণিতে বছরজুড়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের পাশাপাশি বছরে দুটি সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এর মধ্যে একটি হবে শিক্ষাবর্ষের ৬ মাস পর এবং আরেকটি হবে ১২ মাস পর। বিদ্যালয়ের এসব মূল্যায়নেও এক দিনে এক বিষয়ের মূল্যায়ন হবে। মূলত স্কুল সময়টিকে বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ ঘণ্টার বিষয়টি ঠিক করা হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রম ও মূল্যায়নপদ্ধতি তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান। তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতির মূল্যায়নে একটি অংশে লিখিত পরীক্ষা থাকলেও এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে কতটুকু পারদর্শিতা অর্জন করতে পারছে, সেটিই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে হবে। এ জন্য প্রশ্নপত্রের পদ্ধতিও হবে ভিন্ন।

অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, প্রতিটি বিষয়ে এক কর্মদিবসের পাঁচ ঘণ্টায় মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্তটি এসেছে বাস্তবতার ভিত্তিতে। কারণ, ইতিমধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ছয় ঘণ্টা ধরে সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনা করা হয়েছিল। এমনকি একটি বিষয়ে একাধিক দিন এবং একই দিনে একাধিক বিষয়ে মূল্যায়ন কার্যক্রমও হয়েছে। তাতে শিক্ষার্থীদের ওপর কিছুটা চাপ পড়ে। সেটি বিবেচনায় নিয়ে এক দিনে এক বিষয়ে পাঁচ ঘণ্টায় মূল্যায়ন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি এমনভাবে করা হচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীরা চাপ অনুভব করবে না। আর এই পাঁচ ঘণ্টায় শিক্ষার্থীরা কেবল লিখিত পরীক্ষাও দেবে না। তারা নানা রকম হাতে–কলমে কাজেও নিয়োজিত থাকবে এবং বিরতিও থাকবে।

যেভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি হবে

এনসিটিবির খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী, বরাদ্দ করা সময় এবং শিক্ষার্থীর সক্ষমতা বিবেচনা করে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। শিক্ষা বোর্ডের নির্বাচিত ও প্রশিক্ষিত বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীরা (মডারেটর) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, চেক লিস্টসহ প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন। এই চেক লিস্টে দুটি অংশ থাকবে। পর্যবেক্ষণ ছক, যা প্রত্যাবেক্ষক (পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক) কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা (উপস্থাপন, প্রদর্শনী ইত্যাদি) পর্যবেক্ষণ করে একটি অংশ পূরণ করবেন। আরেকটি অংশ পরীক্ষক লিখিত মূল্যায়ন করে পূরণ করবেন।

পরীক্ষক কোনো শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ ছকে প্রাপ্ত তথ্য এবং লিখিত উত্তরপত্র মূল্যায়ন ছকের তথ্য বিবেচনা করে নৈপুণ্য অ্যাপের (মূল্যায়নের ফলাফলের তথ্য সংরক্ষণ হয় এই অ্যাপে) পারদর্শিতার নির্দেশকে (পিআই) ইনপুট দেবেন। তাতে এখনকার মতো নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।

এনসিটিবি বলছে, প্রতিটি পরীক্ষার শুরুতে শিক্ষার্থীর কী কী পারদর্শিতা মূল্যায়ন করা হবে, তা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেবেন। বিষয়ের ভিন্নতা অনুযায়ী কাগজ, পরীক্ষণ, মডেল, নকশা, গ্রাফ ইত্যাদি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের ব্যবস্থা থাকবে পরীক্ষার কেন্দ্রে। শিক্ষা বোর্ডই কেন্দ্র ঠিক করবে। তবে শিক্ষার্থীদের নিজ প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র হবে না। এখনকার মতো অন্য প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র হবে। মোদ্দাকথা, পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাপনার কাজটি এখনকার মতোই শিক্ষা বোর্ডগুলো করবে।

এ দিকে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগেই ‘রিসোর্স পুল’ গঠন করা হবে। আগামী মে মাসে কর্মশালার মাধ্যমে তাদের প্রস্তুত করা হবে।

শিক্ষার্থীর বৈচিত্র্য, চাহিদা ও সক্ষমতা বিবেচনা করে মূল্যায়ন বা পরীক্ষা কার্যক্রমের কৌশলে নমনীয়তা ও বিকল্প উপায়ও রাখা হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।

নবম শ্রেণির ভিত্তিতে নিবন্ধন

এখন একজন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটি নির্ভর করে দশম শ্রেণিতে হওয়া নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার ভিত্তিতে। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে একজন পরীক্ষার্থী দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটি নির্ভর করবে নবম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে হওয়া শিখনকালীন মূল্যায়নের ওপর। যদি কোনো শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়নে ভালো করে, তাহলে দশম শ্রেণিতে উঠবে এবং তার আলোকে নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) হবে। তারাই পাবলিক পরীক্ষা দেবে। এখনকার মতো নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। তবে দশম শ্রেণিতেও শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে।

এনসিটিবি বলছে, দশম শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকে এনসিটিবি প্রণীত নির্দেশিকা অনুসরণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকেরা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতা শেষে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রমাণের ভিত্তিতে পারদর্শিতার নির্দেশক (পিআই) অনুযায়ী নৈপুণ্য অ্যাপে ইনপুট দেবেন এবং প্রমাণগুলো সংরক্ষণ করবেন। তারপর শিক্ষা বোর্ড নির্বাচিত বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নকারীরা (সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরের) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দৈবচয়নের ভিত্তিতে নমুনা নিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের প্রমাণ যাচাই করবেন।

সাত স্কেলে রিপোর্ট কার্ড

এনসিটিবি খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী, মূল্যায়ন বা পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রান্সক্রিপ্ট ও রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে। ট্রান্সক্রিপ্টে একজন শিক্ষার্থী প্রতিটি বিষয়ে পারদর্শিতা কতটুকু অর্জন করল, তার তথ্য উল্লেখ থাকবে। আর রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য আলাদাভাবে সাতটি স্কেলে ফলাফল প্রকাশিত হবে। সাতটি ছকের মাধ্যমে এই সাতটি স্কেল বোঝানো হয়েছে। নির্ধারিত পারদর্শিতা অনুযায়ী ছকগুলো পূরণ করা হবে। তাতে যোগ্যতা অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থীর ছয়টি ঘরও পূরণ হবে, আবার কারও বেলায় তা কমবেশি হবে। ধরা যাক, একজন শিক্ষার্থী নির্ধারিত সূচক অনুযায়ী ছয়টি পারদর্শিতা (পারফরম্যান্স) অর্জন করেছে, তাহলে ছয়টি ছক পূরণ করে বাকি একটি খালি রাখা হবে। এই রিপোর্ট কার্ডই সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।

নতুন মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত একজন শিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যদি তিনটি বিষয়ে পারদর্শিতার প্রারম্ভিক স্তরে থাকে, তাহলে তারা ওপরের ক্লাসে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। অর্থাৎ দশম শ্রেণি শেষে যে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তাতে কোনো শিক্ষার্থী তিন বিষয়ে এমন বেশি খারাপ করলে সে কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, মূল্যায়নে মিশ্র পদ্ধতি হতে পারে। কিন্তু সেটি অবশ্যই কার্যকরভাবে করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন এমনভাবে করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, বুঝতে ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা ইত্যাদি যাচাই করা যায়। আর ধারাবাহিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে।

নতুনসময়/এএম


শিক্ষার্থী, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট, এসএসসি, নাম পরিবর্তন