ঢাকা মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশের সেবা করতে চাওয়া যোদ্ধা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ


২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:২৬

সংগৃহিত

১৯৭৫ সা‌লের ১৫ আগস্ট। বাঙালি জা‌তির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমান‌কে সপরিবারে হত্যার পর সারাদে‌শে বিরাজ কর‌ছিল ভয় আর নীরবতা। এর মধ্যেই সিলেটের বুকে প্রথম প্রতিবাদ জানায় আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

১৯৮৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী খন্দকার মোশতাক সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে জনসভা করতে আসেন। সেসময় তৎকালীন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোশতাকে গণপিঠুনি দিয়ে সিলেট ছাড়া করে। এ ঘটনার দিন ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সেসময় দীর্ঘ ১৭ মাস কারাভোগের পর তিনি মুক্তি পান।

ওয়ান ইলেভেনে অনেকে চাপের পরও তিনি দলের হয়ে মাঠে ছিলেন। নেতাকর্মীরা তাকে সবসময় পাশে পায়। সেনাসমর্থিত ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর নির্যাতন-প্রলোভন সত্ত্বেও পিছু হটেননি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে দুর্ঘ গড়ে তুলেন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। সেসময়য় সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর হাতে ৪৩ দিন আটক ছিলেন এবং শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত হন। পরবর্তিতে এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যেখানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে তার নামও উল্লেখ ছিলও ।

২০০৪ সাল এবং ২০০৮ সালে দুই মেয়াদে বার কাউন্সিলের সদস্য ও ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সিলেটের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মিসবাহ সিরাজ বৃটিশ রাষ্ট্রদুত আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে দোষীদের দন্ড প্রদানে ভূমিকা রাখেন।

১৯৭৭ সালে ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। টানা তিনবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। তবে দুর্দিনে দলের সঙ্গে থাকলেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে অনেকটা বঞ্চিত মিসবাহ সিরাজ। আওয়ামী লীগের সবশেষ কেন্দ্রীয় সম্মেলনে দলীয় কোনও পদ পাননি তিনি। এতে হতাশা বেড়েছে আওয়ামী লীগের তৃনমুলের নেতাকর্মীদের।

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ১৯৭৭ সালে মদন মোহন কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, পরে সভাপতিও হন তিনি। ১৯৮১ সালে বৃহত্তর সিলেটের চার জেলার সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৩ সালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হন তিনি।

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ছাত্রজীবন শেষে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পন। পরবর্তী সময়ে ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দুইদফা সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি টানা তিনবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রায় চার দশক ধরে হামলা-মামলা জেল-জুলুম সবকিছু উপেক্ষা করে দলের প্রয়োজনে মাঠে আছেন মিসবাহ সিরাজ। জঙ্গিরা কাফনের কাপড় পাঠিয়ে তাকে হুমকি দিয়েছিল। ২০০৪ সালের ৭ আগষ্ট সিলেটের গুলশান সেন্টারে জঙ্গিদেও গ্রেণেড হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরবর্তী সময়ে ১২ আগষ্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দেখতে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের আসেন।

সিলেটর জনগনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবার মাঠে নেমেছেন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। দলের সকল স্তরের নেতা কর্মী ও সিলেট-১ এবং ৩ আসনের জনগণের নিকট দোয়া চেয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের সাবেক এই কেন্দ্রীয় নেতা। সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করে যাবেন বলেও জানান এই নেতা ।