ঢাকা মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


মে মাসে ৪৯৬ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৮


১৫ জুন ২০২৩ ০০:৪২

সংগৃহিত

বিদায়ী মে মাসে দেশে ৪৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি আহত হয়েছেন ৭৬৯ জন।

একই সময়ে রেলপথে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত ও সাত জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আট জন আহত ও তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১৪ জুন) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এই প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫২৭ জন নিহত এবং ৭৭৯ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৮৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৮১ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, নিহতের ৩৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও আহতের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মে মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এখানে ১২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১০ জন নিহত ও ১৫১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে। এখানে ২৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত ও ৬২ জন আহত হয়েছেন।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৮২ জন চালক, ৯১ জন পথচারী, ৫৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ৭৮ জন নারী, ৬৩ জন শিশু, চার জন সাংবাদিক, পাঁচ জন চিকিৎসক, দুই জন মুক্তিযোদ্ধা এবং আট জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন- পাঁচ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ১৩৭ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৮৩ জন পথচারী, ৫৩ জন নারী, ৪৫ জন শিশু, ৩৯ জন শিক্ষার্থী, ৩০ জন পরিবহন শ্রমিক, সাত জন শিক্ষক, চার জন চিকিৎসক, দুই জন সাংবাদিক, দুই জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৮৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৮ দশমিক ০৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ বাস, ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, তিন দশমিক ২০ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, আট দশমিক ২৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ছয় দশমিক ১১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, আট দশমিক ৪৬ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ গাড়ির চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং এক দশমিক ৪১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০ দশমিক ০৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার চার দশমিক ৪৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, এক দশমিক ৪১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও এক দশমিক ৪১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ: ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও যাত্রীদের অসতর্কতা; দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল এবং বেপরোয়া গতি; ব্যাটারিচালিত ও ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা; মহাসড়কের নির্মাণে ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তির গাফিলতি; ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা।