ঢাকা শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


বাংলাদেশকে নিতে রাজি ভারত-থাইল্যান্ড, অপেক্ষা মিয়ানমারের


১৫ মার্চ ২০২৩ ০৪:০৩

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তি বাড়াতে ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিদেশীয় মহাসড়কে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় মহাসড়কে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া নিয়ে আপত্তি নেই ভারত-থাইল্যান্ডের। তবে মিয়ানমার বিষয়টি কীভাবে নেয় সেটি দেখার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের তৃতীয় সভা ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে ত্রিদেশীয় মহাসড়কে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি ছিল। আমরা আমাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছি। আমরা ত্রিপক্ষীয় সড়কে যুক্ত হতে চাই। আমরা ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে কথা বলেছি, থাইল্যান্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি আমরা যুক্ত হতে চাই তাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কথা হলো, এটাতে মিয়ানমার কীভাবে রিয়্যাক্ট করবে।

বৈঠকে বিমান এবং মেরিটাইম কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ত্রিদেশীয় মহাসড়কে যুক্ত হওয়া ছাড়াও বিমান যোগাযোগ এবং মেরিটাইম যোগাযোগের বিষয়টি ছিল। বর্তমানে ঢাকা-ব্যাংককে সপ্তাহে ৩৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি চাহিদা থাকলে আরও বেশি ফ্লাইট চালু করা হবে।

বিমান যোগাযোগ আরও বাড়াতে থাইল্যান্ডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি। এটি সম্পন্ন করা গেলে দুদেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আরও সম্ভবনা তৈরি হবে বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন।

এফওসিতে ব্যাংককের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি সারুন চারোয়েনসুওয়ান।

বাংলাদেশ আমাদের ভালো বন্ধু উল্লেখ করে থাইল্যান্ডের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি বলেন, আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারি। সামনে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করতে যাচ্ছে। অনেক খাতেই আমাদের একসঙ্গে কাজ করার মতো সম্ভবনা রয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা একে অপরকে সমর্থন দিতে পারি।

সেক্রেটারি সারুন বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করতে আগ্রহী। এখানে কীভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়, ট্রেড বাড়ানো যায়; সেটি নিয়ে আলোচনা করছে আমাদের একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। আমরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলো প্রতিনিয়ত করে যেতে চাই।

বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করেছি। থাইল্যান্ডের সঙ্গে কাজ করার মতো অনেক সম্ভবনা আমরা দেখতে পাচ্ছি। দেশটির সঙ্গে আমাদের বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার। এটা খুব সহজেই দ্বিগুণ করার সুযোগ রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এটাকে আমরা ২ বিলিয়নে নিতে চাই, এটার জন্য সরকার কাজ করছে।

পৃথিবীর পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান পররাষ্ট্রসচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পূর্বে যোগাযোগ বাড়াতে বলেছেন। সম্পর্কের মাধ্যমে আমরা আমাদের সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব। আমাদের সমস্যা একই ধরনের, সক্ষমতাও একই ধরনের। সুতরাং আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারি এবং একজন আরেকজনের কাছ থেকে শিখতে পারি।

থাইল্যান্ডের সঙ্গে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক পাইপ লাইনে রয়েছে বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন।

পররাষ্ট্রসচিব আরও জানান, থাইল্যান্ড খুব শিগগিরই বিমসটেক সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্মেলনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, থাইল্যান্ড বিমসটেক সম্মেলন সফলভাবে সম্পূর্ণ করবে।

আইকে