ঢাকা সোমবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৫, ২৯শে আশ্বিন ১৪৩২


জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলো রোমান সাম্রাজ্যের ঐতিহাসিক ‘কমোডাস প্যাসেজ’


১৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৪৬

সংগৃহীত

ইতালিতে প্রথমবারের মতো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে রোমান সাম্রাজ্যের ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ ‘কমোডাস প্যাসেজ’। এখানে বসেই কলোসিয়ামের মঞ্চে গ্ল্যাডিয়েটরদের লড়াই উপভোগ করতেন রোমান সম্রাটরা। জনসাধারণের সংস্পর্শ এড়াতেই গোপন এ সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিলেন তারা। কথিত আছে, রোমান ইতিহাসের কুখ্যাত সম্রাট কমোডাস হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন এই টানেলেই।

 

মূলত, প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের এক ত্রাসের নাম কমোডাস, যিনি ইতিহাসে কুখ্যাত হয়ে আছেন ক্ষমতা, বিলাসিতা আর নির্মমতার জন্য। জনতার চোখ এড়িয়ে এই সুড়ঙ্গ তথা ‘কমোডাস প্যাসেজ’-এ বসেই ঐতিহাসিক কলোসিয়ামে গ্ল্যাডিয়েটরদের বাঁচা-মরার লড়াই উপভোগ করতেন এই রোমান সম্রাট।

 

অবশেষে প্রথমবারের মতো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে সুড়ঙ্গটি। স্বেচ্ছাচারী সম্রাট কমোডাসের নামানুসারেই এর নাম দেয়া হয়েছে ‘কমোডাস প্যাসেজ’। সে আমলে সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও এখন থেকে প্রাচীন সম্রাটদের সেই নজরেই সবকিছু উপভোগ করতে পারবে দর্শনার্থীরা।

 

ঐতিহাসিক মতবাদ অনুযায়ী, কলোসিয়ামের মূল নকশার অংশ ছিল না এই প্যাসেজ। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের শেষ ভাগ থেকে দ্বিতীয় শতকের শুরুতে কলোসিয়ামের ভিত্তির নিচ দিয়ে নতুন করে কেটে তৈরি করা হয় গোপন এই সুড়ঙ্গ। যাতে সম্রাটরা এড়াতে পারেন সাধারণ মানুষের সরাসরি সংস্পর্শ।

 

প্রত্নতাত্ত্বিক বারবারা নাজ্জারো বলেন, প্রথমে পরিকল্পনায় না থাকলেও কলোসিয়াম উদ্বোধনের পর সম্রাটরা ভূগর্ভস্থ এই করিডোরটি বানান, যাতে সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে না গিয়েই ভেতরে প্রবেশ করতে পারেন তারা। এটি ছিল একটি কঠিন কাজ। প্রথমবারের মতো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে গোপন সেই পথ।

 

তিনি আরও বলেন, ‘দ্য গ্ল্যাডিয়েটর’ চলচ্চিত্রের পর আরও বিখ্যাত হয়ে ওঠেন সম্রাট কমোডাস, আর তার নামেই এ সুড়ঙ্গের নাম রাখা হয়েছে। উনিশ শতকের শেষ দিকে এই পথটি আবিষ্কৃত হয়। ধারণা করা হয়, এখানেই একবার তাকে হত্যায় চেষ্টা চালানো হয়েছিলো।

 

১৯ শতকের শেষের দিকে সুড়ঙ্গটির সন্ধান পান প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ধারণা করা হয়- এখানেই হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন সম্রাট কমোডাস।

 

একসময় সুড়ঙ্গটির দেয়াল ছিল ঝকঝকে মার্বেল পাথরে মোড়ানো। প্রাচীন আমলেই তা মুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল প্লাস্টারে, যেখানে নানা দৃশ্য ফুটিয়ে তোলেন শিল্পীরা। গম্বুজের ছাদে আর দেয়ালে ছিল প্রাকৃতিক দৃশ্য আর পৌরাণিক নানা কাহিনী। আর প্রবেশপথে খোদাই করা ছিল গ্ল্যাডিয়েটর যুদ্ধ, ভালুক লড়াই আর কসরতকারীদের চিত্র।

 

উল্লেখ্য, কালের ব্যবধানে আর্দ্রতা ও ক্ষয়ের কারণে আজ হারিয়ে গেছে বেশিরভাগ অলঙ্করণই। তবে থ্রিডি ভিডিওতে ভার্চুয়ালি সেই চিত্রগুলো আবারও জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য।