ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রতিকূলতার মাঝেও তৃনমূলে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা


২ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৩৯

সংগৃহিত

বাংলাদেশে করোনা নিয়ে দিন দিন আতংক বাড়ছে । অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছে।অনেকেই আবার ছোট খাট অসুখ বিসুখ, ঠান্ডা, জ্বর, কাশি তে আক্রান্ত হয়ে হাতের কাছে সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্রে যায় চিকিৎসা নিতে কিন্ত এখানে সরকারী কোন এমবিবিএস ডাক্তার না থাকলে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারগন ই মূল ভরসা হয় ওই সকল রোগীদের জন্য।

বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বড় ডাক্তারদের পাওয়া দায়। তারা বিভিন্ন অযুহাতে সাধারন রোগী দেখা অনেকটা বন্ধ করে রেখেছে এমনকি অনেক জায়গায় চেম্বার পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় শতশত রোগী ডাক্তার না দেখাতে পেরে রোগীর স্বজনরা আক্ষেপ করছে।

সারাদেশের চিত্র যখন এ রকম সেই সময়ে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারগন তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করছে। পর্যাপ্ত পিপিই না থাকার পরও ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, এফডব্লিসিতে , উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরূরী ও বহিঃবিভাগে আগত জনগনের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। যেখানে রোগীর সাথে সরাসরি যোগাযোগের কারনে করোনা ভাইরাসের কন্টামিনেটেড হওয়ার চান্স থাকে সেখানে অরক্ষিত ভাবে সেবা দিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে এই সমস্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের।

বঙ্গবন্ধুর প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩_১৯৭৮) এর অংশ হিসেবে সদ্যস্বাধীন দেশে স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে মধ্যমানের চিকিৎসক হিসেবে তৈরী করার জন্য মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) নামক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন উক্ত কোর্স আন্তর্জাতিক ভাবে অনুমোদন করিয়ে আনেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । তারপর ১৯৮০ সালে তাদেরকে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল পেশাগত সনদ প্রদান করে। এরা ইন্টার্নীসহ মোট চার বছরের কোর্স সম্পন্ন করে সরকারের বিভিন্ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র,পরিবার পরিকল্প না কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে পদায়িত হয়ে তৃনমূলের স্বাস্থ্যসেবা ধরে রেখেছে। বিভিন্ন প্রাক্রিতিক দূর্যোগ সহ বিভিন্ন দায়িত্ব যেমন আইলা, সিডর, রোহিংগা ক্যাম্প, হজ্ব ক্যাম্প, বিশ্ব ইজতেমা ক্যাম্প, রানা প্লাজা ধ্বংসজ্ঞ , বর্তমানে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন সেন্টারে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। কিন্ত এই মানুষগুলোকে একটা শ্রেনী কোনভাবেই চায় না তারা পরিচিতি বা স্বীয়ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হোক।তাই নিরবে নিভৃতে গরীবের ডাক্তার খ্যাত হয়ে তৃনমূলে জনগনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।

এই বিষয়ে কথা হয় ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডাঃ এম সাহিদুর রহমান (বাবু) এর সাথে। তিনি জানান, আমাদের বর্তমানে সরকারী কর্মরত প্রায় সাড়ে সাত হাজার উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তারা নিজ নিজ কার্যক্ষেত্র ছাড়াও সরকার কর্তৃক বিশেষ দায়িত্ব কোরনা মোকাবেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যাপ্ত পিপিই ছাড়াই জনগনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।আমরা বঙ্গবন্ধুর সৃষ্ট ডিপ্লোমা চিকিৎসক , আমাদের যা প্রটেক্টিব আছে তাই নিয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে আমাদের উপর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন মেডিকেলে হাজার হাজার ইন্টার্ন ডিপ্লোমা চিকিৎসকরাও ঝুকি নিয়ে কাজ করছে পিপিই ছাড়া তাই কর্তৃপক্ষের কাছে অনতিবিলম্বে পর্যাপ্ত পিপিই সরবরাহ করার অনুরোধ জানাই।

সংগঠনটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রউফ লিটন বলেন, যেখানে কোন এমবিবিএস ডাঃ থাকেনা সেখানে আমরা স্ব স্ব কর্মস্থলে থেকে চিকিৎসা করি কিন্ত আমাদের কথা কেউ মনে রাখে না, সারা জীবন একই চেয়ারে চাকরী করতে হয় পদোন্নতি হয় না, হাজার হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক পাশ করে বের হচ্ছে কিন্ত পদ শূন্য থাকার পরও নিয়োগ হয় না, পদসৃজন হয় না। তাই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি যেন আমাদের দিকে একটু সু-নজর দেন।

বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সংঘঠনের পক্ষ থেকে বেকার ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের সামাজিক ডিসটেন্সিং , বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে জনগনকে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে এবং সেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার জন্য তৈরী আছে বলেও জানান সংগঠনের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ মো মিজানুর রহমান ও  প্রচার ও প্রকাশনা সহ সম্পাদক ডাঃ শোয়াইব আহমেদসহ অনেকেই।