ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১


জামানত ছাড়াই ঋণ দিচ্ছে ব্যাংক


৪ মে ২০২০ ০৫:৩৫

নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফলশ্রতিতে দেশের নিম্নআয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছেন না। অথচ গ্রামীণ অর্থনীতিতে এদের অবদান অনস্বীকার্য। করোনা সংক্রমণের মধ্যে সরকার ঘোষিত তিন হাজার কোটি টাকার তহবিল বিতরণ নীতিমালায় বন্ধক বা মর্টগেজ ছাড়া ঋণ সুবিধা পাবেন প্রান্তিক কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। নীতিমালা অনুযায়ী, নারী ও বিভিন্ন পেশার মানুষও এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। তবে ইতিপূর্বে যারা ঋণ খেলাপি হয়েছেন তারা এ তহবিল থেকে ঋণ সুবিধা পাবেন না।

‘নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিম, ২০২০’ এর পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট এ পর্যালোচনা করেছে।



পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলমান রাখা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তিন হাজার কোটি টাকার তহবিল করা হয়েছে। প্রয়োজনে এ তহবিল বাড়াতে পারবে।

এই স্কিমের মূল উদ্ভাবন হলো- এনজিওর মাধ্যমে গ্রহীতাদের এ ঋণ দেবে ব্যাংক। এর ফলে ঋণ নিতে ব্যাংকের মতো মর্টগেজ বা বন্ধক রাখার প্রয়োজন হবে না। এনজিও গ্রহিতাদের ঋণ দেবে। সেক্ষেত্রে এনজিওগুলো অতিরিক্ত সুদ আদায় করতে না পারে সেজন্য মনিটরিং করা হবে। এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রান্তিক কৃষক ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষেরা সহজে এ ঋণ সুবিধা পাবেন। অতি দরিদ্র ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে এ নীতিমালায়। নারীদের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, এ বিনিয়োগ নিরাপদ। কারণ নীতিমালা অনুযায়ী, অর্থায়নকারী ব্যাংকের কাছে সরাসরি দায়বদ্ধ হবেন আমানত গ্রহণকারী এনজিও। এনজিওগুলো সাধারণ মানুষকে ঋণ দেবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংক, এনজিও ও ঋণ গ্রহিতা প্রত্যেকের একটি নির্দিষ্ট লভ্যাংশ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এ তহবিলের আওতায় ঋণের যথেচ্ছ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ এই আমানত গ্রহণকারী এনজিওকে তাদের বিগত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের দক্ষতা মূল্যায়নের ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা দেয়া হবে।

এদিকে মাঠ পর্যায়ে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে একক গ্রাহক ও ক্ষদ্র উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ঋণ গ্রহীতার পেশা, ব্যবসার ধরণ, টার্নওভার, ফসল উৎপাদনের পঞ্জিকা অনুযায়ী গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতিমালায়, ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের চার্জ বা ফিস প্রদান করতে হবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ঋণের মেয়াদ চলাকালে ঋণগ্রহীতার কোন সমস্যার ক্ষেত্রে এই নীতিমালায় বীমার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া ঋণখেলাপিদের জন্য এ তহবিলে ঋণ পাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।