গাজিপুর টঙ্গীর ৬ মাদক গডফাদার র্যাবের হাতে গ্রেফতার

যুব সমাজ দেশ ও জাতির আগামী দিনের চালিকা শক্তি, তাদের একটি অংশ মাদকাসক্তির কবলে পড়ে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড যেমন- ছিনতাই-রাহাজানি, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, ইত্যাদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময়ই মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
এই পর্যন্ত র্যাব বিপুল পরিমান দেশী/বিদেশী অবৈধ মাদক উদ্ধার করে জনমনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২। মাদক মুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে যে, বেশ কিছুদিন ধরে একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদক দ্রব্য কৌশলে রাজধানীতে নিয়ে আসছে।
চক্রটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। কখনো যাত্রীবাহী বাসে করে, কখনো পঁচনশীল মৌসুমী শাক-সবজি বহনকারী ট্রাকে করে, কখনো ধান, ভূট্টা বহনকারী গাড়িতে করে, আবার কখনো কখনো ব্যক্তিগত গাড়িতে করে মাদক দ্রব্য রাজধানীতে নিয়ে আসছে বলে জানা যায়।
গেপান সুত্রে জানা যায়, দিনাজপুর হতে মাদকের একটি বড় চালান রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে আসছে। ফলশ্রুতিতে মাদক ব্যবসায়ী চক্রটিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং মাদক দ্রব্যের চালানটির গতিবিধি অনুসরণ করার লক্ষ্যে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে আভিযানিক দলটি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শালিকচূড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে মাদক দ্রব্য বহনকারী ট্রাকের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ০১ জুন ২০১৯ ইং তারিখ আনুমানিক ৪টায় ঘটিকায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর আভিযানিক দলটি জিএমপি, গাজীপুর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শালিকচূড়া এরশাদনগরস্থ এশিয়া ফুয়েল স্টেশন এর পশ্চিম পার্শ্বে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃ জেলা মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য ১) শ্রী শিবু বর্মন, শ্রী রসেন বর্মন (২০), মোঃ নূর ইসলাম (৩০), মোঃ লোকমান হোসেন (২৪), মোঃ জিহাদ হোসেন (২০), মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩০), পিতা- মৃত আবুল হোসেন মৃধা, সাং- বিষ্ণুগীসহ গ্রেফতার করে র্যাব। এসময় আসামীদের নিকট থাকা মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক হতে ৮৫৮ বোতল ফেন্সিডিল ও ০৯ টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ৫০,৫০০ টাকা, ০১ টি ট্রাক, ০১ টি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার। সে গত প্রায় ১০ বছর যাবত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক চালিয়ে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ফাঁকি দিয়ে ট্রাকে মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল দেশের বিভিন্ন জেলা হতে রাজধানীতে নিয়ে আসে। মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে চালানপ্রতি ২০,০০০/- টাকা করে দিত। সে ইতিপূর্বে একাধিকবার দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদকের চালান ঢাকায় নিয়ে আসে। মাদক পরিবহনে রসেন বর্মন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে বলে জানায়।
ধৃত আসামী রসেন বর্মন’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ট্রাকের হেলপার হিসেবে কর্মরত। সে ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর গ্রামে কৃষিকাজ করত। কৃষিকাজের ফাঁকে ফাঁকে সে শিবু বর্মন এর সাথে মাদক পরিবহনে সহযোগী হিসেবে কাজ করত। সে শিবু বর্মন এর সাথে একাধিকবার দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদকের চালান ঢাকায় নিয়ে এসেছে বলে জানায়।’
নতুনসময়/আল-এম