গোসলের ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার-৪

বরিশালের উজিরপুরের বামরাইল ইউনিয়নের একটি গোসলের সময় নগ্ন ভিডিও ধারণ করে পরবর্তীতে তা প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক মিলন রাঢ়ীকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ মে) রাতে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূ উজিরপুর মডেল থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ মিলনকে গ্রেফতার করে। ধর্ষক মিলন ওই এলাকার ফারুক রাঢ়ীর ছেলে ও দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী।
এছাড়া মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সজীব শরীফ, বামরাইল এলাকার কালাম শরীফ ও ফরহাদ শরীফ।
মামলা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূ দেড় বছর যাবত তার স্বামীর সাথে ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। গত ৬ মাস পূর্বে একই বাড়ির ভাড়াটিয়া মিলন রাঢ়ী গোপনে মোবাইল ফোনে ওই গৃহবধূর গোসলের নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর তা ইন্টারনেটে ফাঁস করার হুমকি দিয়ে একাধিকবার ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে।
সর্বশেষ গত কয়েকদিন আগে ওই গৃহবধূকে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে বখাটে মিলন তার স্বামীকে ওই নগ্ন ভিডিও দেখায়। এনিয়ে ওই গৃহবধূর পরিবারে কলহ শুরু হয়। পরবর্তীতে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গত ১৭ মে রাতে ওই ধর্ষিতা গৃহবধূর ভাড়া বাসায় গিয়ে বামরাইল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান রাঢ়ী, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সজীব শরীফ, স্থানীয় কালাম শরীফ, ফরহাদ শরীফসহ একাধিক প্রভাবশালীরা ধর্ষিতা ও তার স্বামীকে ১০ হাজার টাকা দেয়। সেই সাথে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশসহ কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি প্রদান করে।
গৃহবধূর স্বামী জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে ওই ১০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার পর তাদেরকে ভাড়াটিয়া বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপরই মঙ্গলবার রাতে তার স্ত্রী বাদী হয়ে হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সজীব শরীফসহ অন্যান্যরা জানান, ‘আমরা এ ধরনের ঘটনার কোন সালিশি করিনি কিংবা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও করিনি। আমাদের বিরুদ্ধে এগুলো সব ষড়যন্ত্র।’
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
নতুনসময়/আইকে