ভূয়া এনআইডি কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা, সিআইডির হাতে গ্রেফতার ৬
 
                                জাল-ভূয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে একটি প্রতারক চক্র শনাক্ত করে সিআইডির সাইবার টিম। পরবর্তীতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ৬ প্রতারককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো সাইফুল ইসলাম @ সোহেল (৩০), তারেক (৩১), মোঃ সবুজ মিয়া (২৬), টিপু সুলতান (৪১), রিয়াজ খান (২৬) এবং শামসুল করিম (৪১)। এ সময় তাদের নিকট ছয়টি মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন কোম্পানির সিম জব্দ করা হয়।
প্রতারক চক্রের সহায়তায় ভূয়া জন্মসনদ, এনআইডি ও পাসপোর্ট পাচ্ছে রোহিঙ্গা ও দাগি আসামিরা । চট্টগ্রামের কৃষক ওমর ফারুক’কে টার্গেট করে তার এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে দালাল চক্রের সদস্যরা তার ছবি, ঠিকানা ও এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে কক্সবাজারে থাকা ওমর ফারুক নামে এক রোহিঙ্গার পাসপোর্ট তৈরি করে বিপুল পারিমাণের অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি। দাগি অপরাধী ও রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া শক্তিশালী প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য পাওয়া যায়। ওমর ফারুকের মতো সাধারণ মানুষের এনআইডি কার্ড সংগ্রহে সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। সংগ্রহের পর অন্যজনের নামে অবৈধভাবে তৈরি করা হয় এনআইডি কার্ড। এ চক্রটি ভুয়া এনআইডি তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে লিয়াজু করে ব্যাংক ঋণ পেতে সহায়তা করত। ভূয়া এনআইডি তৈরীর মাধ্যমে প্রবাসে থাকা এমন অনেক ব্যক্তির অজান্তেই নিজের পৈত্রিক ভিটেমাটি অন্য ভাই বোনের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে থাকতো । নতুন ভাবে নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে ফোন দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিচয় দিয়ে অর্থ চাওয়া এবং গ্রহণ করা ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ। বায়োমেট্রিক আপলোড দ্রুত করার জন্য অর্থ গ্রহণসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে সাধারণ সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অর্থ সংগ্রহ পূর্বক প্রতারণা করত।
চক্রটি সাধারণ আবেদনকারীদের নিকট থেকে অধিক টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কমানোসহ এনআইডির যাবতীয় সংশোধন (যেমন-নাম ও ঠিকানা, বয়স পরিবর্তন) এর কাজ করে আসছে। আবেদনকারীদের নিকট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কমানোর জন্য আবেদনকারীভেদে প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতো। কতিপয় আবেদনকারীরা তাদের প্রকৃত বয়স কমিয়ে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করার জন্য আসামীদের সাথে বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে যোগাযোগ করতো। নির্বাচন কমিশন অফিসে কর্মরত অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় আবেদনকারীদের প্রকৃত বয়স কমিয়ে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করার জন্য তাদের নিকট হতে বিভিন্ন পরিমাণে টাকা গ্রহণ করতো। এ কাজে প্রতারকচক্র তিনটি পর্যায়ে কাজ করে। ভূয়া জন্মসনদ তৈরি করে সেটি দিয়ে এনআইডি কার্ড করা হয়। আর সেটি দিয়ে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকসহ দাগি আসামিদের জন্য পাসপোর্ট। এই সক্রিয় চক্রটি রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় পত্র সার্ভারে ব্লক করা থাকলেও তারা আনব্লক করার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা দাবি করত।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এনআইডি সংশোধন এর অন্য প্রয়োজনীয় সকল জাল ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরীপূর্বক আবেদনের কপি নির্বাচন কমিশন অফিসে কর্মরত কতিপয় অসাধু-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছে। তারা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে এমএফএস ব্যবহার করত। চক্রটি নির্বাচন সচিবালয়ের স্বপদে থাকা বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে, বিশেষ করে তাদের ছুটি কালীন সমযের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর এনআইডি তৈরী, সংশোধন করে দেবার নাম করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিতো।

 
                 
                                                    -2019-06-05-12-27-15.jpg) 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                         
                                                         
                                                         
                                                         
                                                         
                                                         
                                                        -2024-09-02-09-55-40.jpg) 
                                                         
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            